মূলগল্প: ট্রেসি লি-নিউম্যান
অনুবাদ: লুনা রাহনুমা
নাইজল যখন ঘটনাটি জানতে পারলো, তখন তার মুখটি চিমসে ম্লান হয়ে গেছে। তার ভ্রূ দুটি কুঁচকে একটি হয়ে কপালের উপরে ঝুলতে থাকা মাথার চুলগুলোকে ছুঁয়ে ফেললো।
নাইজলের সেই মুখটি দেখে মেয়েটির খুবই আশ্চর্য লাগে, এই মুখের ভেতরে সে কী দেখেছিল? গতকালই নাইজল সাগর তীরে খাড়া একটি চুড়োর নিচে তোয়ালে বিছাচ্ছিল যখন, তখন তার স্ত্রীকে লোভাতুর চোখে পাহাড়ের চুড়োর ঠিক মাথায় তাকাতে দেখে সতর্ক করে বলেছে, ‘হেলেন, একদম সহস দেখাবে না।’
যদিও কথাটি বলেই তিনি হেসে ফেলেছিলেন। কারণ, গত বিশ বছর হেলেন পাহাড়ে উঠেনি। তাদের যমজ বাচ্চাদের জন্ম হবার পর আর পাহাড় বাওয়া হয়ে উঠেনি হেলেনের। কারণ, বাচ্চাদের জন্মের পর হেলেনের মা-শরীর ভারী হয়ে গেছে। পাহাড়ে ওঠার মতো শরীরের অবস্থা নেই আর তার। কারণ, এই সময়ে এসে এমন চিন্তা করাটাও হাস্যকর যে হেলেন এখনো নিজের শখের কিছু একটা আঁকড়ে ধরার কথা ভাবতে পারে।
কিন্তু, এই তো! হেলেন ঠিকই পৌঁছে গেছে এখানে। পাথুরে পাহাড়ের গাঁ বেয়ে সূর্যোদয় হচ্ছে। শান্ত শীতল নীলজল অনেক অনেক নীচে, ধরা ছোঁয়ার একদম শেষ সীমানায়।
হেলেনের হাতের আঙ্গুলগুলো থেতলে গেছে, তার দুই বাহু জ্বলে যাচ্ছে, আর তার দুই পায়ের তলা খণ্ড খণ্ড হয়ে গেছে, সেখানে রক্তের পিচ্ছিলতা। কিন্তু হেলেন হাসছে। আবার, হেলেন কাঁদছে। এটা তার জীবনে প্রথমবার একা পাহাড় চূড়োয় উঠে যাওয়া। চুড়োর ওপর দাঁড়িয়ে হেলেন নাইজলের হতাশামাখা দীর্ঘশ্বাস কল্পনা করতে পারে ঠিক ঐ অনেক নিচে নীল সাগরের বুকে জলের ঢেউ আছড়ে পড়ে মিলিয়ে গেলো যেমন করে।
লেখক পরিচিতি: ট্রেসি লি-নিউম্যান, তিনি সম্প্রতি এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্রিয়েটিভ রাইটিংয়ে (ডিস্ট্রিঙ্কশন) স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বর্তমানে নিজের উপন্যাস লেখায় ব্যস্ত। তিনি নিজের পরিবার নিয়ে এসেক্সে বসবাস করেন। স্পেশাল নীডস কো-অর্ডিনেটর হিসেবে পার্ট টাইম চাকরি করেন।
অলঙ্করণ: নূরুল আসাদ