জলের নুপূর
এক.
এমন শ্রাবণ রাতে বন্ধু তুমি অনেক দূর
ওগো জলের নূপুর।
আকাশে আজ মেঘ জমেছে, বাতাসে তার বাঁশি
হিজল তলায় কে কার গলায় পরায় প্রেমের ফাঁসি।
ওই বাতাসে ভেসে আসে তারই মধুর সুর।
ওগো জলের নূপুর।
কেমন আছ, কোথায় আছ কাকে ভালোবেসে
একবার এসে যাও গো বলে আমার ঘুমের দেশে।
ও গো মধুর মধুর হেসে।
আমার মনের শ্রাবণে আজ ভিজবে তোমার চুল
ঘুমকে আমার দিলাম ছুটি বৃষ্টিকে বকুল।
তুমি আমার মরমিয়া রোদেলা দুপুর।
ওগো জলের নূপুর।
দুই.
অকারণে দোষী হলি ওরে পোড়া মন
বলরে বিধি জ্বলছে কেন আমার দু-নয়ন
হারিয়ে আমার মনের মানুষ খুঁজি ঘাটে ঘাটে
ওরে ও মেঘ উত্তরে যাও মনের মাঠে মাঠে
যেখানে আজ হারিয়ে এলাম আমার আপন জন
বিধিরে তোর আদালতে আমি অপরাধী
নিজের বিচার চাইতে এলাম হয়ে নিজেই বাদী
কেন তারে খুঁজে আজও পোহায় নারে ক্ষণ।
সে যে আমার গোলাপ ছিল আমি নিঠুর খুনি
অন্ধরাতে মুগ্ধ আমি নিত্য সে গান শুনি
বিধিরে বল, কেন আমার হয় নারে মরণ।
তিন.
ওরে আমার হৃদয়রে তুই কাঁদলি জনম ভর
জগৎজুড়ে দেখলি কেবল শূন্য বালু চর।
ও তোর পথে পথে তুলছেরে দেখ, কালনাগিনীর ফণা
আজও চিনলি না তুই মনের মানুষ ওরে অবুঝ মনা
ও তোর শূন্যভিটায় সাপের বসত রাখলি না খবর।
পথে পথে ঘুরলেকি আর পাবিরে তুই সুখ
মন-মানুষের আঘাত পেলে ভাঙেই জানি বুক
এবার ঘরকে যখন পর করেছিস, পথ হবে তোর ঘর।
যারে খুঁজে মরিস পাগল দেখলি না তুই তারে
সে তোর মনের ভেতর বসে কাঁদায় বারে বারে।
ও তুই অন্ধ বলে চিনলি নারে আজও আপন পর।
অলঙ্করণ: নূরুল আসাদ