অনন্তযাত্রা ॥ মহুয়া বৈদ্য


নবান্ন
জ্বরের অসুখ আজ বিনিময়ে প্রথাবদ্ধ ধান
নবান্নের সুখটানে মজে ওঠা রোদের বিকাল
নীরব পুকুর জলে খোলামকুচির ঢিল… গ্লুব
জলের দাগের সীমা প্রসারিত শেষ সীমানায়
সবকিছু ফেলাছড়া বিনিয়মে প্রথাবদ্ধ খই
তারার সাজের মতো তাপমোচী উনানের পাশে
একমুঠো শূন্য যেন ছড়িয়েছে কাক জোছনায়
জ্বরের নিয়ম ভেঙে চেতনার আদালত তবু
নতুন ধানের গন্ধ নিকিয়েছে মাটির উঠোনে

শুকতারা অবসান। ভোরের জানালা খোলা হলো?

স্নান
জলের হাতল থেকে গড়িয়েছে আঁশফলী রোদ
কলপাড়ে শ্যাওলার অবিরাম ছায়াবাজি-খেল
নিরাময় শালিখ-ডানায় ওড়ে?

তুমুল জোয়ার-ভাটা
মোচার খোলের মতো…তোলাবাজি।
নিমেষ-সফর কথা…

যত্মের ঠিক পাশে মিছরির স্বাদে কথা-রৌদ্রাভা বালতিতে এসে পড়লো, কি কাণ্ড!
মুহূর্তেই ঘোলাজলে স্নান
কিছু আলপ্তি-বিভাব

বেড়াল-লোমের মতো নরম নখরস্রোতে গা ভেসেছে কোনোদিন?

অনন্তযাত্রা
ঢেউ উঠেছে সমুদ্রে, প্রবাল প্রাচীরে তার মৃদুমন্দ রেশ
হাওয়াকে গানের পাশে রেখে দিল এক মুঠো মৃত অস্থিদেশ
মমির দেশের মেয়ে ক্ষীণতোয়া নদীটির জলের ছোঁয়ায়
দুহাত আঁজলা পেতে মুঠিটুকু জড়ো করে আছে, আশাহীন
নদী-সহ বাস তার, তবুও যে মনে মনে জলের প্রত্যাশা
হৃদয়ে সতত ছিল হয় নাই তার অধিবাস

একক সূর্যাস্ত রং সাদা শুধু সাদা চারধার
সহস্র মন্ত্রের গুণে কাটবে না এমন আন্ধার
আগলে রাখেনি কেউ, ধিকি ধিকি নিমেষ প্রস্তাব
আড়ালে আড়ালে জেনো কালান্তক অট্টহাসি…পাপ…
যাত্রা তবু স্থির থাকে, আগুনের পাশটিতে ধূপছায়া জল
একান্তর পুষ্পরথ, নিছক জীবন দাবি… পথের সম্বল।