দাঁড়িয়ে থাকার গল্পটা ॥ লুৎফর রহমান রিটন


ছুটির এক দুপুরে অটোয়া পার্লামেন্ট হিলের সামনে লুৎফর রহমান রিটন। আলোকচিত্র: সাবরিনা নদী

সময়কাল ২০০৩। নতুন আসা কানাডায় আমার তখন টিকে থাকার অনিঃশ্বেষ
সংগ্রাম। নদী স্কুলে পড়ে। শার্লি সংসার সামলায়। আর আমি কাজ করি। একজনের আয়ে সংসার চালানো কঠিন। আমাকে তাই দিনে দু’টো ‘জব’ বা কাজ করতে হয়।

কি কাজ?

ফুটানিকা ডিব্বা বাঙালিরা এই ধরণের জবকে বলে ‘অড জব’। অথচ আমেরিকা কানাডা ইউরোপে কোনো জবই অড জব নয়। আমার কাজটা দাঁড়িয়ে থেকে করতে হয়। বসার সুযোগ একদমই নেই। আমি একজন বেকার অর্থাৎ মাফিন-কেক আর বিস্কুট তৈরি করি। বার্গার আর স্যান্ডুইচ বানাই। এবং ক্যাশ কাউন্টারে দায়িত্ব পালন করি। বেকারির কাজে এতোটাই দক্ষতা অর্জন করেছিলাম যে টানা পাঁচ-ছয় বছর আমি এই প্রফেশনে ছিলাম। কেক বানানো মাফিন বানানো কিংবা নানান রকমের বিস্কুট বানানোর কাজটা তেমন কঠিন লাগতো না আমার কাছে। কঠিন ছিলো টানা আট ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকাটা। সে এক অবর্ণনীয় কষ্ট।

প্রথম কাজটা সকাল ছয়টায় শুরু হয়ে দুপুর দুইটায় শেষ হয়। দ্বিতীয় কাজটা শুরু হয় বিকেল চারটায় এবং শেষ হয় রাত দশটায়। প্রথম কাজটা আট ঘন্টার হলেও দ্বিতীয় কাজটায় ছয় ঘন্টার শিফট। প্রথম কাজটা অটোয়ার ডাউন টাউনে। কার্লিং এভেনিউর উড্রিজ ক্রিসেট থেকে অর্থাৎ আমার বাসা থেকে বেশ দূরে। ছয়টায় শুরু হওয়া কাজটায় সময় মতো পৌঁছাতে ভোর পাঁচটার বাসে আমাকে চেপে বসতে হয়। তারপর দুপুর দুইটায় কাজ শেষ করে ফের বাসে চেপে বাড়ি ফিরতে লেগে যায় আরো প্রায় এক ঘন্টা। বাড়ি ফিরে চোখে মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে সোফায় শুয়ে সামান্য একটু রেস্ট নিয়েই ছুটতে হয় বাস ধরতে। দ্বিতীয় কাজটা চারটায় শুরু। ওটাও আমার বাসা থেকে হাঁটার দূরত্বে নয়। বাসে করেই যাওয়া লাগে। চারটা থেকে দশটা পর্যন্ত কাজ করে সাড়ে দশটায় যখন ফিরে আসি বাড়িতে তখন আমার বেহাল বিধ্বস্ত অবস্থা। দ্রুত ভাত খেয়ে বেডরুমের সমস্ত আলো নিভিয়ে দিয়ে একটা ঘুমের জন্যে তৎপর হয়ে উঠি। সিডি প্লেয়ারে একটা গান তখন খুব বাজাই–আর কারো চোখে আমি দোষী নই, শুধু তোমার নির্দোষ চোখে আমি দোষী…। ব্যান্ড শিল্পী মিজানের গাওয়া গান। মিজানের আর কোনো গান আমি শুনিনি। কিন্তু ওই একটা গান এমন দরদ দিয়ে গেয়েছেন মিজান যে গানটা আমার প্রিয়র তালিকায় অনায়াসে ঠাঁই করে নিয়েছিলো।

সারাটা দিন দাঁড়িয়ে থাকার কাজটা করেছি বলে পা আমার ফুলে ঢোল। ব্যথায় কাতর আমার পায়ে শার্লি কিছুটা উপশম দিতে চায়। কিন্তু আমার খারাপ লাগে। শার্লি জোর করে দুই পা মালিশ করে দেয় পরম মমতায়–একটু ঘুমা। আবার তো উঠতে হবে কয়েক ঘন্টা পরেই! ফোলা পা দু’টোকে স্বাভাবিক চেহারায় ফিরিয়ে আনতে শার্লি আমার পায়ের নিচে চারটা পাঁচটা বালিশ দিয়ে দেয়। রাত বারোটা থেকে ভোর সারে তিনটা চারটা পর্যন্ত পা দু’টো ঊর্ধাকাশমুখী করে রাখতে পারলে পায়ের ফুলে যাওয়া চেহারাটা বেশ স্বাভাবিক হয়ে ওঠে।

গান শুনতে শুনতে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। তারপর চারটায় জেগে উঠি ঘড়ির কর্কশ এলার্মে। আমার আগেই উঠে পড়ে শার্লি। টেবিলে আমার জন্যে খাবার রেডি করে রাখে। আমি দ্রুত শাওয়ার নিয়ে খেয়ে তারপর কাঁধে একটা ব্যাকপ্যাক ঝুলিয়ে বাস স্টপে এসে দাঁড়াই। ঠিক পাঁচটায় বাস চলে আসে। শীত এবং বরফের কালে ভোর পাঁচটার বাস ধরতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করার এই সময়টা কতো কষ্টকর সেটা লিখে বোঝানো কঠিন। যদিও পরনে মোটা উইন্টার জ্যাকেট, ইনারসমৃদ্ধ প্যান্ট আর স্নোবুট এবং হাতের গ্লোভস ও মাথার হুডি বহাল থাকে তথাপি প্রচন্ড উইন্ডচিল অর্থাৎ শৈত্যপ্রবাহ দুর্বিষহ করে তোলে প্রতিটা মুহূর্তকে।

প্রতিদিন রাতে পায়ের ব্যথায় কাতর আমি একটু ঘুমানোর জন্যে যখন নিদ্রাদেবীকে কাতর কণ্ঠে আহবান করি–এসো গো নিদ্রা দেবী, আমাকে একটু ঘুম দিয়ে যাও, ঘুম দিয়ে যাও, ঘুম দিয়ে যাও…। নিদ্রাদেবী তখন হাসে–অতো সহজে আমি আমি ধরা দেই না রে পাগল। আমাকে পেতে হলে সাধনা কর। সাধনায় সিদ্ধিলাভ।

এই ভয়াবহ সময়টায় মাঝে মধ্যেই একটা কিশোরকে আমার মনে পড়ে। সে আমার ‘ছোটদের কাগজ’ পত্রিকার অফিসে পিওনের কাজ করতো। স্মৃতি আমাকে এক ঝটকায় ঢাকায় ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

০২
শাহবাগ আজিজ মার্কেটের তিন তলায় ছিলো আমার ‘ছোটদের কাগজ’-এর অফিস। সময়কাল ১৯৯৬। এক কক্ষ বিশিষ্ট মোটামুটি পরিসরের ছিমছাম সেই অফিসে একটা সেক্রেটারিয়েট টেবিল, আমার কাজের সুবিধার বিবেচনায় একটা রিভলবিং চেয়ার, অতিথিদের জন্যে চারটে আরামদায়ক চেয়ার ওই টেবিলের সামনে , একটা ছোট আলমারি এবং দেয়াল সাঁটানো একটা সুদৃশ্য বইয়ের র‍্যাক–এই ছিলো ফার্নিচার।

অফিসে প্রতিদিন আমাকে সহায়তা করার জন্যে একজন কিশোরকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পদটা ‘অফিস সহকারী’ হলেও আমাদের এলিট ও আধা এলিট মধ্যবিত্তের কাছে ওটা পিওন। ছোটদের কাগজের সেই ‘কিশোর পিওন’ ছেলেটা খুবই হাসিখুশি। উদ্যমী। আজিজ মার্কেটের নিচ তলায় আমার রিকশাটা পৌঁছালেই কোত্থেকে ছুটে আসতো সে। তারপর আমার সঙ্গে নড়বড়ে লিফট কিংবা সিঁড়ি টপকে অফিসের দরোজায় এসে আমার কাছ থেকে চাবি নিয়ে তালা খুলে সাটারটা ওপরের দিকে চালান করে দিতো। তারপর টেবিল-চেয়ারসহ পুরো অফিসটাকে ক্লিন ঝকঝকে করে তুলতো। তারপর আমার জন্যে নিয়ে আসতো ধোঁয়া ওঠা এককাপ গরম চা। তিন তলার চায়ের দোকান থেকে সারাদিন আমার নিজের ও অতিথিদের জন্যে চা এবং সিঙ্গারার চালান নিয়ে আসতো ছেলেটা। সন্ধ্যায় বা রাতে ফেরার সময় ছেলেটা আমাকে টাকার অংকটা বলতো। তারপর আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে চা-স্টলের পাওনা পরিশোধ করতো।

ছেলেটার অফিস টাইম আমার অফিস টাইমের সঙ্গে নির্ধারিত। আমি দুপুরে চলে গেলে দুপুর থেকেই ওর ছুটি। আমি রাতে ফিরলে তারও ফেরার টাইম রাতে। আমি অফিসে না এলে সারাদিন ওর ছুটি। মাসের মাইনের টাকাটা পেলে তার মুখে উজ্জ্বল হাসি ফুটে উঠতো। নির্ধারিত মাইনের বাইরেও প্রতিদিন কিছু বখশিস পেতো সে। আর পেতো চা-সিঙ্গারা-বিস্কুটের ভাগ।

এক বিকেলে কাজ করতে করতে খেয়াল করলাম, যতোক্ষণ আমি অফিসে থাকি, ডাকা মাত্র মুহূর্তেই সামনে এসে দাঁড়ায় ছেলেটা। লক্ষ্য করলাম আমার অফিসে থাকার পুরোটা সময় সে দাঁড়িয়ে থাকে রেলিং ধরে, টানা বারান্দায়। এই সময়টায় আশপাশের অফিসগুলোর ওর বয়েসী পিওনদের সঙ্গে গসিপিং-এ মেতে থাকে সে। কিন্তু ওর কান থাকে উৎকীর্ণ–কখন আমি ডাকবো তাকে।
খুব মায়া হলো ছেলেটার জন্যে।
সারাটা দিন সে দাঁড়িয়ে থাকে! আহারে!

পরদিন আমি রিকশা থেকে নামছি যখন, ছেলেটা ছুটে এলো। আমার সঙ্গে সেদিন নিজের ব্যাগ-কাগজপত্র ছাড়াও ছোট্ট সুদৃশ্য একটা টুল। স্টিলের পায়া আর গোলাকার আসন সমৃদ্ধ টুল। আসনটার রেক্সিনের নিচে নরম ফোমের সমাহার। টুলটা সে তুলে নিলো হাতে। তারপর তিনতলার অফিস খুলে ওটা ভেতরে আমার টেবিলের সামনে থাকা চেয়ারগুলোর পাশে রেখে দিলো। ওয়াশরুম থেকে এসে ওকে ডাকলাম। মুহূর্তেই হাজির সে–জ্বি স্যার।
–এই টুলটা তোর জন্যে এনেছি।
–মানে? আমার জন্যে টুল!
–হ্যাঁ তোর জন্যে টুল। সারাদিন তুই দাঁড়িয়ে থাকিস। এখন থেকে এটায় বসে থাকবি।
–স্যার এইটার উপ্রে আমি বসুম! (ছেলেটার চোখে একই সঙ্গে বিস্ময় আর অবিশ্বাস)
–হ বসবি ব্যাটা।
খুশিতে চকচক করে ওঠে ছেলেটার চোখ–
–স্যার কুনখানে বসমু আমি?
–এইখানে এই রুমের ভিত্রেও বসতে পারিস। দরজাটার মুখেও বসতে পারিস। যেইখানে তোর ভালো লাগে।
–না স্যার ভিত্রে বসুম না। আপনের কাছে নামী দামি স্যারেরা আসে মেডামরা আসে আমি স্যার তাইলে বাইরে নিয়া যাই টুলটা? বাইরে বসি বারান্দাটায়?
–তোর যেইখানে খুশি বস গিয়া।

মহা আনন্দে ভাসতে ভাসতে ছেলেটা টুলটা নিয়ে বেরিয়ে গেলো। তারপর আমার দরোজা বরাবর না বসে খানিকটা ডানে চেপে রেলিং-এর পাশে টুলটা স্থাপন করে সেখানে গদগদ ভঙ্গিতে বসলো। আমি টের পেলাম ওকে ঘিরে ওর বয়েসী পিওন বন্ধুদের জটলা।

এরপর প্রতিদিন অফিস বন্ধ করার সময় ছেলেটা তার প্রিয় টুলটা অনেক যত্নে ভেতরে নিয়ে আসে। আবার অফিস খোলার পর টুলটা বারান্দায় নিয়ে যায়। সারাদিন সে মনের আনন্দে টুলটায় বসে থাকে কখন আমি ডাকবো তাকে।

কয়েকদিন পর এক সন্ধ্যায় দু’জন ভদ্রলোক এলেন আমার কাছে–একটু আসবো?
কেতাদুরস্ত পোশাক দু’জনেরই। একজনের পরনে লেদারের জ্যাকেট অন্যজনের গায়ে ব্লেজার। আমি উঠে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করলাম–আসুন আসুন। বসুন। আপনারা? কোত্থেকে?
ওদের একজন পরিচয় দিলেন–আপনার বাঁ পাশের দুইটা অফিস আমাদের।
আমি বললাম–বাহ্‌ তার মানে আমরা নেইবার।
পিওনকে হাঁক দিলাম এই চা দে রে তিন কাপ…।

দ্রুতই তিন কাপ চা নিয়ে এলো ছেলেটা। চায়ে চুমুক দিতে দিতে একজন কেতাদুরস্ত ভদ্রলোক বললেন,
–আপনি তো বিখ্যাত মানুষ। একদিন আসেন না আমাদের অফিসে।
–নিশ্চয়ই। পরিচয় যখন হলো নিশ্চয়ই আসবো।
অন্যজন বললেন,
–আপনার কাছে এসেছি বিশেষ একটা প্রয়োজনে।
খুব মনোযোগী হয়ে উঠলাম আমি,
–জ্বি জ্বি বলুন।
–আপনি তো আমাদের বিপদেই ফেলে দিয়েছেন?
–বিপদে? আমি? কী ভাবে?
–এই যে আপনি আপনার পিওনকে একটা টুল দিয়েছেন বসার জন্যে
–কী মুশকিল! আমার পিওনকে বসার জন্যে আমি টুল দিয়েছি, এতে আপনার বিপদটা কোথায় আমি তো ঠিক বুঝলাম না ভাইজান!
–না মানে হয়েছে কি আমাদেরও তো পিওন আছে অফিসে। ওর কাছাকাছি বয়েসের। ব্যাপারটা নিয়ে ওরা ফিসফিস ক’রে আলাপ করে। মুশকিল না! আমাদের অনুরোধ টুলটা আপনি দিয়েন না। এতে করে আমাদের মানে আপনার প্রতিবেশীদের অফিসিয়াল ডেকোরাম নষ্ট হচ্ছে। প্লিজ আপনি শিক্ষিত মানুষ। বিখ্যাত মানুষ। আশা করি আপনি বিষয়টা বুঝবেন।

খানিকক্ষণ একেবারেই চুপ করে থাকলাম আমি। কেতাদুরস্তরা অপেক্ষা করছে আমার জবাবের। ওদের দু’জনার চোখের দিকে তাকালাম আমি। তারপর বললাম,
–জীবনে একটা কঠিন শিক্ষা পেলাম ভাই! আসলে শিক্ষা না ধাক্কা খেলাম। আপনারা যেভাবে বললেন সেভাবে ভাবিনি আমি। আমাকে ক্ষমা করবেন।
শুনে খুশি হয়ে উঠলেন দু’জনেই। একজন বললেন,
–আরে না না ক্ষমা করার কথা বলছেন কেনো!
আমি বললাম,
–আমাকে ক্ষমা করবেন কারণ আপনাদের অনুরোধ আমি রক্ষা করতে পারবো না। টুলটা ওখানেই থাকবে। আমার পিওনটা সেই টুলেই বসবে। আমি তো ভেবেছিলাম আমার দেখাদেখি আপনারাও আপনাদের পিওনদের বসার জন্যে একটা কিছুর ব্যবস্থা করবেন। তা না করে আপনারা আমার কাছে এসেছেন টুলটা সরানোর অনুরোধ নিয়ে! আশ্চর্য!
বলতে বলতে আমি উঠে দাঁড়ালাম। অর্থাৎ কী না এইবার আসেন আমাকে আমার কাজ করতে দেন।

খানিকটা অপমানিত চেহারা নিয়ে ওরা দু’জন বেরিয়ে গেলেন। আমি খেয়াল করলাম এতোক্ষণ ধরে চলতে থাকা আমাদের কনভারসেশনের পুরোটাই আড়ালে দাঁড়িয়ে শুনেছে ছোটদের কাগজের পিওন ছেলেটা। ওকে ডাকতেই সেকেন্ডেরও কম সময়ে সে ভেতরে প্রবেশ করলো। কেমন একটা জড়োসড়ো অপরাধীর ভঙ্গি ওর বডি ল্যাঙ্গুয়েজে।
আমি বললাম,
–কী রে ব্যাটা তুই সব শুনছস?
খুব ব্যথাতুর কণ্ঠে ছেলেটা বললো,–জ্বি স্যার।
আমি বললাম,
–মেজাজটা খারাপ হইয়া গেছে। অফিসটা বন্ধ কর। আইজকা আর অফিস করতে পারুম না।

দেখি ছেলেটার চোখ ছলছল করছে। আমি বললাম, তুই ঘাবড়াইস না ব্যাটা। তর টুল তরই থাকবো। রোজ তুই অই টুলে বইসা থাইকা ডিউটি করবি। আমি কি ডরাই নিকি ব্যাটা অই হালাগো!

দেখলাম, ছেলেটা কোনো কথা বলে না। অথচ কী যেনো একটা বলতে চায় কিন্তু পারে না। বারকয় ঢোক গেলে সে অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে, তারপর খুব বিব্রত হয়ে বলে,
–আপনের জন্যে দোয়া করি স্যার…

কানাডায় গভীর রাতে পায়ের ব্যথায় জর্জর অবস্থায় একটু ঘুমের প্রত্যাশায় নিদ্রাদেবীকে কাতর অনুনয় করতে করতে প্রায়শঃ আমার ছোটদের কাগজের সেই পিওন ছেলেটার চেহারা মনে পড়তো। ওর সেই অপ্রস্তুত বিব্রত জড়োসড়ো অপরাধীর ভঙ্গিতে বলা সংলাপটা কানে বাজতো–আপনের জন্যে দোয়া করি স্যার…

কী দোয়া করলি রে হারামজাদা! তোর দোয়ার বদৌলতে আমি তো এখন দাঁড়িয়ে থাকার জব করি রে ব্যাটা!!

অটোয়া ১৪ জুন ২০২১

[ লেখাটি লেখকের ফেসবুক থেকে নেওয়া। বানান রীতি লেখকের ]