কবি কাজী রোজী আর নেই


একুশে পদক প্রাপ্ত কবি ও সাবেক সাংসদ কাজী রোজী আর নেই। শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২) দিবাগত রাত আড়াইটার পর রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছেন তার কন্যা সুমী সিকান্দার।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ৩০ জানুয়ারি তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে স্ট্রোক করেন তিনি।
১৯৪৯ সালের ১ জানুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সাতক্ষীরায় জন্মগ্রহণ করেন কাজী রোজী। তাঁর বাবার নাম কাজী শহীদুল ইসলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে তিনি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন। ২০০৭ সালে তথ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা হিসেবে অবসর নেন।

ষাটের দশকে কবিতা লেখা শুরু করেন কাজী রোজী। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো— ‘লড়াই’, ‘পথঘাট মানুষের নাম’, ‘আমার পিরানের কোনো মাপ নেই’ প্রভৃতি। কবিতায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ২০২১ সালের বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন।

কাজী রোজী দশম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী (আসন-৪৩) আসনের সাংসদ ছিলেন। তিনি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাতক্ষীরা জেলার জন্য নির্ধারিত সংরক্ষিত নারী আসন থেকে প্রথমবারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন। জাতীয় সংসদের গ্রন্থাগারসংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী ও তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিবিদ আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের চতুর্থ সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন কাজী রোজী।

কাজী রোজীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কবিতা রচনা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে সাহসী ভূমিকার জন্য কাজী রোজী স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’ তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতিও গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।