যে পথ ছুঁয়েছ তুমি ॥ শারমিন আহমেদ


কোনো কোনো পরিচয় স্বল্প সময়ের জন্য কিন্তু এর প্রগাঢ়তা হয়ে থাকে দীর্ঘ।মমতার এক সুদীর্ঘ অদৃশ্য টান থাকে।সেই টান হয় স্বর্গীয়, ধরাছোঁয়ার বাইরের কিছু এক মজবুত অনুভব।

বাসন্ডার তীরের তিনতলা বাড়ির তালুকদার আরশাদ আর তাঁর স্ত্রী সুবর্ণার দাম্পত্য আঠাশ বছরের হলেও একুশ বছর ধরে তাঁরা একই গৃহের আলাদা কক্ষে বসবাস করেন।জীবনের দূরত্ব এতটাই যে মুখোমুখি দাঁড়াতে দেয়নি কাউকে, চাইলেও নয়।একটা খুনের ঘটনায় প্রাণে বেঁচে ফিরে আসেন ঘরে কিন্তু ঘোচেনি স্ত্রীর সাথে মনোদৈহিক দূরত্ব।স্ত্রী সুবর্ণা আঁকড়ে রইলেন মাতৃত্বকে কেন্দ্র করে, একমাত্র পুত্র সজল আর দুই কন্যা নিয়ে।তালুকদার বাড়ির ইতিহাস এমনই।সুবর্ণা তাঁর পুত্র সন্তান সজলকে এই ক্রোমোজোম কেন্দ্রিক অভিশাপ হতে দূরে রাখতে চান।লেখাপড়া শিখিয়ে সুস্থ এক জীবনে দেখতে চান।

সজলের জীবনে আসে তিন নারী।কৈশোরের প্রেমিকা রোহিণী যাকে তাঁর বাবা পরিবার শুদ্ধ গ্রাম ছাড়া করেছিল।আর আসে পারিবারিক পছন্দের পাত্রী স্বপ্না এবং এক্সিডেন্টের কারণে পরিচিত স্বর্ণা।এই তিন নারীকে কেন্দ্র করে সজলের জীবনে শুরু হয় এক গোলক ধাঁধা।শাকের ভালোবাসে স্বর্ণাকে। কিন্তু স্বর্ণা ভয় পায় ওকে, ওর ভয়ে পালিয়ে বেড়ায় ওরা ভিন্ন গ্রামে।আচম্বিত স্বর্ণার মৃত্যু সজলকে নিয়ে যায় আদালতে। কে হত্যা করেছিল স্বর্ণাকে? সজল কী পেরেছিল মায়ের স্বপ্নকে পূরণ করতে? কার হাত ছুঁতে গিয়ে সে নিজের পথ হারিয়েছিল জানতে হলে পড়তে হবে এই বইটি।

লেখক শামস সাইদ এর বেশ কয়েকটি অন্যান্য বিষয়ভিত্তিক বই পড়া হয়েছে। তাঁর লেখা রোমান্টিক বই আমার এই প্রথম পড়া। কেনার পর বই ফেলে রাখা আমার ধাতে সয় না।মেলা হতে গতকালই বইটি কেনা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর একটানা পড়ে যাবার মতো একটা রোমান্টিক উপন্যাস পেলাম। ধন্যবাদ জানাই লেখককে, এমন প্রাঞ্জল ভাষায় লিখুন আরও কিছু উপন্যাস।

বইটি কেনার পর এর উৎসর্গ পত্রটি দেখে বিস্ময়াভুত না হয়ে পারিনি। পৃথিবীটা এখনও টিকে আছে মমত্বের বাঁধনের জন্য।কৃতজ্ঞতা লেখক শামস সাইদের প্রতি।নিজে বই পড়ুন, অপরকেও পড়তে উৎসাহ দিন।
বই হোক বন্ধু, বই হোক হাতিয়ার।
ধন্যবাদ, হ্যাপি কিবোর্ডিং।

উপন্যাস : যে পথ ছুঁয়েছ তুমি
লেখক : শামস সাইদ
দাম : ৩৫০ টাকা
প্রকাশনী : অর্জন
প্রচ্ছদ : লক্ষণ চন্দ্র নাথ