প্রতিবিম্ব
আমি প্রতিদিন ঈশ্বরকে দেখি, সুন্দর আয়তকার
দিঘির মতো চোখে দেখতে দেখতে ভাবি-আহা
কী অপরূপ ঈশ্বর!
এতদিন শুধু তুমিই জানলে না নটরাজ নটবর।
ঈশ্বরকে দেখার বাসনা আমার অনেক দিনের
রমনার লেক থেকে জাফলং এর সুদূর দিগন্তে
জাহাঙ্গীনগরের সুশীতল মায়াময় ক্যাম্পাস কিংবা
ঢেউ খেলে যাওয়া পদ্মার রিসোর্টে রিসোর্টে
বহু মনোরমে বহু বিহারে ফেলেছি পা-
কতো খুঁজেছি তারে, হয়তোবা তা ঈশ্বরও জানে না।
শেষে দেখি, সুন্দর থেকে সুন্দর সব চোখে
ঈশ্বর আমার আছেন বসিয়া সবার অলোকে।
জীবনের নদী
ঢাকার বুড়িগঙ্গা কিংবা টঙ্গীর তুরাগ
যেখান দিয়েই যাই, এদের ঘিরে দেখি
অসংখ্য জীবনের ঘুড়ি ঘুড়ি খেলা-
ঘুড়ি উড়ে গোত্তা খায়, কখনো সুদুরে খেই হারায়
কখনো বা ঝিম মেরে তার কেটে যায় বেলা।
ঘুড়িই জানেনা কোন খেলায় জড়িয়েছে সে-
আর কী কারণে এক মেরুতে এসে মেশে দুই নদী
তুরাগ-বুড়িগঙ্গা, সেটাও তো আর জানা হলো না
এ অবধি। ঝাপসা দৃষ্টিতে সৃষ্টি বেমানান-
বড় বিদঘুটে এই জীবনের নদী..
নগ্নকালের পোড়োবাড়ি
নগ্নকালের পোড়োবাড়িতে কে আমাকে ডেকে নিয়ে যায়
সে ডাকে কেন এতো আকুলতা, কেন হাওয়ায় হাওয়ায়
তার এতো মাদকতা ঝরে ঝরে পড়ে।কেন অন্তরমম
নিয়ে যায় উড়িয়ে হার না মানা কাল বৈশাখির ঝড়ে।
মেঘের দোলনায় কে দোলায় আমারে, দে দোল রাঙা পায়ে
কার নুপুর আমায় মাতাল করে আজ অসম প্রহরে।
হায় প্রিয় শৈশব, কোথা আজ সব- বুকে কেন তার এতো
হাহাকার।কেন সে আজ ধার ধারে না কোন বাধার।
কেন সে আজ হতে চায় এমন বলগাহীন, কেন সে ফেলে
আসা খোলসে হতে চায় লীন। কেনো এই উন্মাদনা, কেনো সে
বুনোতে মাতামাতি- সর্বনাশের এ বাঁশি কে তবে বাজায়,
নগ্নকালের পোড়োবাড়িতে কে আমাকে ডেকে নিয়ে যায়…
এই পৃথিবী আসলেই খুব সুন্দর
দূর্বাঘাসের বুক চিরে আমার দিকে
ঠিক আমার দিকেই
তাকিয়েছিলো এক ফুল, আর
আমার বুকে হুলস্থুল চলছিলো
তাকে নিয়ে।
নজরকাড়া হলুদে রাঙা দুহিতা আমার
হিতাহিতের ভিত
এতখানি নাড়িয়ে দিলো যে, সবকিছু
ভুলে মূল্যবান সময়কে গৌণ করে
ঠায় দাঁড়িয়ে রইলাম
-ঘাসের বুকে কে তুমি সুন্দর,
তব রূপে আমি যে মইলাম..
কেবল কী বনে, এই
শহরেও দেখি কতো মুখ-
তা দেখতেই যেন হা করেছিলো
দুই চোখ, আর বুকে ছিলো
তারই যেন বুভুক্ষু হাহাকার..
এই পৃথিবী আসলেই খুব সুন্দর আর
বড় মায়াময়, এমন সুন্দর মাঝে
বিলীন হতে
কার না মনে লয়..