প্রথম ভারতীয় লেখক জিতলেন আন্তর্জাতিক বুকার


আন্তর্জাতিক বুকার ২০২২ পুরস্কার জয়ী গীতাঞ্জলি শ্রী

আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার পেয়েছেন ভারতীয় লেখক গীতাঞ্জলি শ্রী।শুক্রবার (২৭ মে ২০২২) বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।বৃহস্পতিবার (২৬ মে) লন্ডনে একটি অনুষ্ঠানে গীতাঞ্জলির হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে।

হিন্দি ভাষায় লেখা ‘রেত সমাধি’ উপন্যাসের ইংরেজি অনুবাদ ‘টুম্ব অব স্যান্ড’-এর জন্য গীতাঞ্জলি শ্রী এই পুরস্কার পেলেন। এই প্রথম হিন্দি সাহিত্যের কোনো উপন্যাস আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার পেল।

উপন্যাসটি হিন্দি থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অনুবাদক ডেইজি রকওয়েল। আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কারের মূল্যমান ৫০ হাজার পাউন্ড। পুরস্কারের এই অর্থ লেখক গীতাঞ্জলি শ্রী ও অনুবাদক ডেইজি রকওয়েলের মধ্যে ভাগাভাগি হবে।

উপন্যাসটির প্রেক্ষাপট ১৯৪৭ সালের দেশভাগ। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ৮০ বছর বয়সী এক নারী।

বিবিসি জানায়, ১৯৪৭ সালের ভারতভাগের প্রেক্ষাপট নিয়ে গীতাঞ্জলির উপন্যাস ‘টম্ব অব স্যান্ড’-এ এক অশীতিপর বিধবার পারিবারিক সুখ-দুঃখের বর্ণনা আছে। হিন্দি ভাষার একটি বই এই প্রথম ৫০ হাজার পাউন্ড মূল্যমানের এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়।

পুরস্কার গ্রহণ করে গীতাঞ্জলি শ্রী বলেছেন, ‘আমি কখনই বুকারের স্বপ্ন দেখিনি। আমি কখনই ভাবিনি যে আমি পারব। কী বিশাল স্বীকৃতি, আমি বিস্মিত, আনন্দিত, সম্মানিত এবং বিনীত। পুরস্কার পাওয়ায় এক বিষণ্ণ তৃপ্তি আছে।

তিনি বলেন, ‘রেত সমাধি বা টম্ব অফ স্যান্ড হলো আমাদের বসবাসের জগতের জন্য একটি শোভা। একটি স্থায়ী শক্তি, যা আসন্ন ধ্বংসের মুখে আশাকে ধরে রাখে। বুকার অবশ্যই এটিকে অনেক বেশি লোকের কাছে নিয়ে যাবে।’

হিন্দি কথাসাহিত্যের এই প্রথম বুকার স্বীকৃতির বিষয়ে ৬৪ বছর বয়সি লেখিকা বলেছেন, ‘ভালো লাগছে। কিন্তু আমার এবং এই বইটির পেছনে রয়েছে হিন্দি এবং অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় ভাষায় একটি সমৃদ্ধ এবং বিকাশমান সাহিত্য ঐতিহ্য। বিশ্বসাহিত্য এই ভাষার সেরা লেখকদের সম্পর্কে জানার জন্য আরও সমৃদ্ধ হবে। এতে শব্দভাণ্ডার বৃদ্ধি পাবে।’

৮০ বছরের এক বৃদ্ধার গল্প বলেছে ‘রেত সমাধি’ উপন্যাসটি। স্বামীর মৃত্যুর পর পাকিস্তানে পাড়ি দিয়েছেন সেই বৃদ্ধা। দেশভাগ দেখেছিলেন তিনি। সেই সময়ের ক্ষতগুলিই যেন ফের ছুঁয়ে দেখতে চান বৃদ্ধা। একজন মেয়ের ভূমিকায়, মায়ের ভূমিকায়, এক নারীর ভূমিকায়, কিংবা এক নারীবাদীর ভূমিকায় ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সেই সময়ের মূল্যায়ন করতে চাইছেন তিনি।

সূত্র: গার্ডিয়ান, বিবিসি