দিনাজপুর বাংলা ভূখণ্ডের সাংস্কৃতিক ও লোকসংস্কৃতি সমৃদ্ধ একটি জেলা। পালাটিয়া এ অঞ্চলের একটি লোকশিল্প। এ অঞ্চলে হরহামেশা দেখা মিলতো পালাটিয়া উৎসবের।এরই ধারাবাহিকতায় এবার পালাটিয়া মেলায় সম্মাননা পাচ্ছেন কবি রাহেল রাজিব।
জানা যায়, ‘পালাটিয়া মেলা’ শুরু হয় ২০০২ সালে। প্রতি বছর এ মেলা বিশিষ্টজনকে সম্মাননা দিয়ে আসছে। এ মেলা প্রতি বছর ২৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়।মেলা চলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত।
এর আগে নাট্যকার মামুনুর রশীদ, নাট্যকার শাহজাহান শাহ, কাজী বোলানো, শঙ্কর সাঁওজাল, ডা. শান্তনু বসু, ডা. আহাদ আলী প্রমুখ এ সম্মাননা পেয়েছেন।
আয়োজকরা জানান, ২০২২ সালের জন্য কবিতায় কবি রাহেল রাজিব ও চিকিৎসাক্ষেত্রে অবদানের জন্য ডা. খাদিজা নাহিদ ইভা মনোনীত হয়েছেন।আগামী ২৯ নভেম্বর তাদের হাতে এ সম্মাননা তুলে দেওয়া হবে।
পরেশ-ময়েন মেলার উৎস সম্পর্কে লোকসংস্কৃতি গবেষক কবি মাসুদুল হক বলেন, ‘পালাটিয়া শিল্পী পরেশ চন্দ্র রায় দিনাজপুরের বীরগঞ্জের কৈকুরীতে জন্মগ্রহণ করেন।দিনাজপুর শহরের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও অভিনেতা ময়েন চিস্তির প্রেরণায় পালাটিয়াকে শহরের মানুষের কাছে তুলে ধরতে উদ্যোগ নেন।এরই মধ্যে ময়েন চিস্তি পালাটিয়ার ফর্মের পরিবর্তন বিষয়ে ড. মাসুদুল হক ও নাট্যকার শাহজাহান শাহের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা ও ক্ষেত্রসমীক্ষা চালিয়ে নতুন ফর্ম এলান টো বাইস্কোপ সৃষ্টি করেন।’
তিনি বলেন, ‘এ সময় পরেশের সঙ্গে মদন, চানু, মুন্নী, রুবলী, দুলাল বসাকসহ অন্যরা যুক্ত হন।কবিয়াল নরেশ চন্দ্রও এগিয়ে আসেন এ ফর্মের নবায়নে।সবার সহযোগিতায় ‘পালাটিয়া মেলা’ শুরু হয় ২০০২ সালে।২০০৬ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় পরেশ চন্দ্র রায় মারা গেলে ‘পালাটিয়া মেলা’র নাম ‘পরেশ মেলা’ করা হয়। এরপর ২০১৬ সালে ময়েন চিস্তি ক্যানসারে মারা গেলে মেলার নামকরণ হয় ‘পরেশ-ময়েন মেলা’।’
কবি রাহেল রাজিব সম্মাননা প্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘১৯৯৭ সাল থেকে লিখছি।দেশ-বিদেশের অনেক সম্মাননা ও পুরস্কার পেয়েছি।কিন্তু নিজ জেলায় এমন একটি সমৃদ্ধ লোকসংস্কৃতি মেলা, যেটি দুই দশকের বেশি চলমান; সেখানে সম্মানিত হতে পেরে আনন্দিত ও গর্বিত। দিনাজপুর আমার নাড়িমাটি।আমার নাড়িমাটি প্রদত্ত এ সম্মাননা আমার লেখক জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’