ওর সঙ্গে আগেও আমার দেখা হয়েছে, তবে প্রথম কোথায় এবং কখন
ঠিক মনে পড়ছে না,
কখনও কখনও অল্প পরিচিত মানুষও
খুব আপন হয়ে ওঠে।
দ্বিতীয়বার আমাদের দেখা হয় একটি পরিচ্ছন্ন সেমিট্রিতে,
তখন ওর হাতে ফুল ছিল না,
এপিটাপের পাশে, যেখানে লেখা ছিল, `তোমার অশ্রুর স্পর্শে জেগে উঠবো’, ঠিক ওখানটায়,
ফুলগুলো নুয়ে পড়ে বিকেলের আলো ছড়াচ্ছিল;
বুঝতে পারি পুষ্পাঞ্জলির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে অনেকটা সময়ের তাপ;
লোকটি নীরবে, নিঃশব্দে অশ্রুপাত করে চলেছে,
যদি সে কথা রাখে,
প্রতিশ্রুতি রেখে ঠিক ঠিক জেগে ওঠে,
এই প্রত্যাশায়।
লুসি জাগেনি, একথা আমরা সকলেই জানি, মৃতেরা কখনো জেগে ওঠে না,
তারপরেও এই সত্যকে রহস্যের প্রলেপে আড়াল করে আমরা অশ্রুপাত করতে ভালোবাসি।
লোকটির নাম অস্কার, আমি ওর ডান কাঁধের ওপর হাত রাখি,
শীতল কাঁধ, সংবেদনহীন।
কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলি,
`ঘরে চলো’।
অস্কার ঘুরে তাকায়,
হোক না অল্প চেনা, তবুও তো চেনা মুখ,
বহু অচেনার ভেতর থেকে বের করে আনার চেষ্টা করে সে;
কিছুই না বলে একটু হাসে; আমি বুঝতে পারি অস্কার আমাকে চিনেছে।
অশ্রুভেজা চোখের হাসি কী-যে স্নিগ্ধ
এর আগে এই উপলব্ধি আমার হয়নি কখনো।
আমি আবারও বলি, ঘরে চলো অস্কার, লুসি জাগবে না,
ওরা জানালো, তুমি দুদিন ধরে এখানেই দাঁড়িয়ে আছ।
অস্কার রেগে যায়, ওরা মিথ্যে বলেছে, অন্তত দু’বার আমি ফিরে গেছি,
কিন্তু ঘর তো খুঁজে পাইনি; লুসি ছাড়া আমার কী আর কোনো ঘর আছে?
অস্কার কী এ-কথাই আমাকে শেখাল,
পুরুষেরা জীবনের সকল রাস্তার দুপাশে
শুধু একটি ঘরই খোঁজে,
প্রিয় রমনী ছাড়া পুরুষের আর কোনো ঘর নেই।