শিল্পের একটি শাখার সাথে আরেকটর সূত্র স্বর্ণলতার মতো জড়িয়ে থাকে।শিল্পের সব মাধ্যমের জন্য আমার দৃষ্টিতে তিনটা বিষয় খুব জরুরি।এক.পঠন।
দুই. মানুষ, প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ।
তিন. দলীয় পক্ষপাতিত্ব থেকে অন্তত প্রকাশ্যে মুক্ত থাকা।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প উপন্যাস তখন পর্যন্ত কালজয়ী ছিল, যখন তিনি প্রকাশ্য রাজনীতির সাথে জড়াননি।কথাসাহিত্যিক হাজান আজিজুল হক,আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, রিজিয়া রহমানের সান্নিধ্যে এইসব কারণেই
স্মরণীয় লাগে, রাজনীতির কোন ব্যাপারে এঁদের ন্যুনতম অন্ধত্ব ছিল না।
সমালোচনাহীন ছিল না।
আরও নাম নেয়া যায়।
কিন্তু এক স্লিপে আমার অনুভব বোঝানোর জন্য আপাতত এইটুকু। তাঁদের কাছ থেকে চাতকের মতো অপেক্ষা করে করে বিশ্বসাহিত্যের ভালো বই সম্পর্কে জেনেছি।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ছাদে আশির দশকের বন্ধুদের মাধ্যমে জেনেছি।রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছি, রাজনীতির মধ্যে হেলান না দিয়েই।অসামান্য কবি শঙ্খ ঘোষকে কাছের মানুষ হিসেবে পেয়েছি। তিনি তো রাষ্ট্রীয় পদক ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। এ দেশের প্রধানতম কবি আল মাহমুদের কবিতাও ধর্মীয় রাজনীতিতে হেলান দেয়ার আগে কেমন ছিল? আহা! গাঙের ঢেউয়ের মতো বলো কন্যা কবুল কবুল! দেশপ্রেম আর রাজনীতি এক নয়।
অবাক হয়ে লক্ষ্য করেছি,অনেক শিক্ষিত মানুষও এটা বোঝে না।রাষ্টীয় কারণে আমাদের রাজনীতির আবহে বাস করতে হয়,সেটা অন্য কথা।
রাজনৈতিক চেতনা থাকাও লেখকের জন্য জরুরি।মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া যাঁদের নাম নিলাম, তাঁরা সবাই আমার লেখা পড়ে আমাকে খুঁজে নিয়েছেন।এসব অসাধারণ প্রাপ্তি আমার জীবনে আছে।এমন অনেক গুণী মানুষের সান্নিধ্যে থেকে আমার সাহিত্য যথাসম্ভব শেখার চেষ্টা করেছে। এবং জীবনও।
এই লেখাটা তাদের জন্য, যারা নানা জায়গা নানাভাবে প্রশ্ন করেন, লেখক হওয়ায় জরুরি বিষয়গুলি কী? আমি তো এখনো হাঁটছি,কিন্তু আমি জীবন থেকে এভাবেই সাহিত্যে নিয়েছি। নিচ্ছি।
[লেখাটি লেখকের ফেসবুক থেকে নেওয়া ]