বিধবা
নদীটির দী-র্ঘ-শ্বা-সে-র প্রান্তে পা-জোড়া নামিয়ে আড়াআড়ি হেঁটে পেরিয়ে এলাম দিগন্তে হারানো মাঠ! আমার পথ হারানোর ভয় ছিল না গো, হাতে সময় কম ছিল। অবাধ্য মনের দাসত্ব মেনে চোখ দুটোও খুব জ্বলছিল, আর গোধূলির পেছনে চলছিল বিষণ্ণ সান্ধ্যপাঠ!
দেখা হলো—
শস্যবতী রাইয়ের সাথে, সবুজ ডগায় নাচছিল, থামল হঠাৎ!
দেখা হলো—
সদ্য প্রসূতি-গাইয়ের সাথে, এঁড়েটিকে চাটছিল, থামল হঠাৎ!
নিঃসঙ্গ বীজতলাটি
আলগা হওয়া শুকনো মাটি
ঘাসফুলের রঙিন মুখ….
সবাই কেমন চমকে উঠে করুণ চোখে আমার ফেরা দেখছিল! কেবল আমিই তখনো বিশ্বাস করে উঠতে পারিনি, তোমার দুচোখ বন্ধ ছিল! চিরতরে!
প্রেম পিয়াসী
পথের বসন্তে তোমার পদচিহ্ন লাগে না কতকাল!
জানালায় ঠান্ডা চাঁদ রেখে বেহায়া হিম ঢুকে পড়ে ঘরে। অনাহূত অতিথি যেন, আমি মুখ ঘুরিয়ে নিই, আর তোমার স্মৃতিটুকু আগলে রেখে ওম পোহাই এইসব বুড়ি শীতে।
বিষাদ অসুখে মরে রাত্রির পেঁচা, রাতভর কাঁদে বৃক্ষসকল; আমিই তাদের প্রিয়তর সাক্ষী! পাখিদের আলোর আয়োজন শুরু হলে স্নান-সারা ফিরতি পথে দেখি ঝরাপাতায় জমে আছে নিওর, মুক্তো দানার মতো। তাতে ফের হেসে ওঠে রুগ্ন প্রত্যাশা!
এই ফুরিয়ে আসা শীতের পড়শি বসন্তে; যখন শাখায় শাখায় রং লাগবে, হাওয়ায় মিলন সুর থাকবে, প্রেমপিয়াসী মনের খরায় তুমিই জলস্পর্শ হইয়ো।
নয়ত আমার গোরের পথ চিনে নিও মহাকালের থেকে!
অলঙ্করণ: নূরুল আসাদ