পিতা সৈয়দ আবুল কাশেম, মা মোসাম্মদ হাসিনা খাতুনের তৃতীয় ও সর্বকনিষ্ঠ সন্তান সৈয়দ আকরম হোসেন জন্মেছিলেন ৮ ডিসেম্বর ১৯৪৪ সালে।
যশোর জেলার কালীগঞ্জ থানার গোপালপুর গ্রামের সকল লাবণ্য ও শ্যামলিমা ভর করেছিলো সেদিন তার অঙ্গজুড়ে। আমি স্যারকে প্রথম দেখি, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে স্বাধীন বাংলাদেশে। ১৯৭২-৭৩ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ভর্তি হয়েছি সবে। মন উরু উরু অসাধ্য সাধনে,চরণে ক্ষিপ্র গতি…পৃথিবী ভ্রমণের বাসনালোকে।স্বাধীনতা উত্তর নতুন বাংলাদেশে তখন, সকলি সঙ্গীতময়।
মায়ারোদে—ভেসে যায় গীতিময় মাতৃভাষার করিডোর।
নিরন্তর দখিনা বাতাস বহে বাংলা বিভাগের দোতলা ঘিরে।
প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আমি।
বাংলা বিভাগ আমার বিভাগ!
ড. নীলিমা ইব্রাহিম, আমাদের বিভাগীয় প্রধান,
ড. আহমদ শরীফ, ড. সনজিদা খাতুন
ড. মনিরুজ্জামান,
ড. রফিকুল ইসলাম
আবুল কাসেম ফজলুল হক,
সৈয়দ আকরম হোসেন,
আবু জাফর, আহমদ কবীর, নরেন বিশ্বাস—সকলেই যে আজ আমারই শিক্ষক।
এই গৌরব কোথায় যে রাখি!
রণাঙ্গনের যুদ্ধ শেষে মফস্বল থেকে দলে দলে আমরা ভর্তি হতে এসেছিলাম ঐতিহ্যবাহী প্রাচ্যের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।ছাত্রজীবনের যত রঙিন বাষ্প, কল্পনার নদী,স্বপ্নবিরচিত গান—-প্রজাপতি পাখায় ভর করেই যেন সেদিন সেসব নিয়ে এসেছিলাম জ্ঞানের অসীম চূড়া—স্পর্শ করবার স্পর্ধা নিয়ে।
-হৃদয়ে বেজেছে অনুক্ষণ সেই বেহালার সুর, মর্মে ছিলো নবজীবনের সাধন সংগীত।
একদিকে জাতীয় সংগীতের সুরে চোখ ভেসে যায় জলে,
অপরদিকে মন জেগে ওঠে লাল-সবুজের পতাকাতলে।
ঢাক-ঢোল আর এস্রাজের আনন্দ-বাদ্যে জয়বাংলার অপার্থিব এক শক্তির মর্মধ্বনি টের পাই তখনো।
একটি জাতির পুনর্জাগরণের মহাসন্ধিক্ষণে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, আর আমাদের জ্ঞানের পাঠ দিয়েছেন সেই সব প্রজ্ঞাবান শিক্ষক, দূর থেকে এতকাল যাদের কেবল নাম শুনেছি।
তাদের অনেকেই আজ জ্ঞানের রাজ্যে আমাদের
প্রতিদিনের নমস্য।কি যে আনন্দ মনে!
ক্লাস শেষে বাংলা বিভাগের করিডোরে দাঁড়ালে দেখতাম বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের ভাস্কর্য’ অপরাজেয় বাংলা’র নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে—শিল্পী সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদের নেতৃত্বে।
তার পাশ দিয়ে দৃষ্টি চলে যেতো ঘন সবুজ ঘাসের চত্ত্বরে।
মন কেমন-করা এক শ্যামল ছায়া আমাদের ছুঁয়ে থাকতো অনুক্ষণ।
দক্ষিণে ঝাঁকড়া মাথার বটগাছের সবুজ পাতারা ডেকে নিতো কাছে।আমি লিলি, সাইদা—তিন বন্ধু মিলে প্রায়ই যেতাম সেখানে।সেই শ্যামল তৃণের হাতছানি প্রতিদিন
বড়ো মমতায় কাছে ডেকে নিতো, এখনো ডাকে।
কিন্তু সেই সময়কালে মানিকগঞ্জ শহর থেকে মফস্বলের ধুলি-মলিন মাখা মেয়ে আমি রাজধানীর গলির মতো অচেনা ও ছায়াময়।
বহিরঙ্গে অতি লাজনম্র এক ভীতু,শাদা-মাটা বালিকা।
হরিণ শাবকের মতো বিস্ফারিত নয়নে চেয়ে চেয়ে দেখি চাকচিক্যময় রাজধানীর মোহময় লাল-নীল আলোর আবেশ।
১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়রের প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের তীরে দাঁড়িয়ে নিজেকে ভীষণভাবে ক্ষুদ্র মনে হতো। মনে হতো আমি যেন জ্ঞানের এই মহাসমুদ্র তীরে
পড়া থাকা নির্জীব সামান্য বালুকণা।কখন জল হবো স্রোতে মেশা? কেবলি সেই অপেক্ষা।
কিন্তু স্যারদের জ্ঞানের আলোর কাছকাছি গেলে নিজেকে মনে হতো যেন আঁধারের অনুছায়া।
তবু যেন শিখতে চাই শিক্ষকদের হাঁটা-চলার বিশেষ শৈলি, তাদের জ্ঞান অন্বেষণের একাগ্রতায় মনোনিবেশ করি গভীর আস্থায়।চিরকালই শিক্ষকেরা আমার প্রাণের মানুষ।
তাদের জ্ঞানের প্রতি আমার অপরিসীম ভক্তি, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা। তারা যে আমার দীক্ষাগুরু।
অগ্নির মতো নমস্য ব্যক্তিত্ব।
বিস্ময়ে দিশেহীন সেই ব্যাকুল দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি জ্ঞানের মহিমায় ভাস্বর আমাদের শিক্ষকদেরকে এবং করিডোরে দাঁড়ানো সব—সিনিয়র শিক্ষার্থী।
যাদেরকে মান্য করতে হতো যথা বড়ভাই ও বড় বোনদের মতো।
তবে একথা আজ হলফ করে বলতে পারি যে,আমার বহুকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নময় সাবজেক্টে নির্বাচিত হয়ে ঢাবির বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে’ ভর্তির ঘটনাটি ছিলো আমার জীবনের টার্নিংপয়েন্ট।
আর আমি যে ভবিষ্যতের একজন শিক্ষক হবো,তার নেপথ্যের অনুপ্রেরণায় ছিলেন আমাদের প্রিয় শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেন স্যার। তার হাঁটা-চলা, কথা বলার বিশেষ মায়াময় ভঙ্গিমা—গভীর অভিনিবেশ সহকারে অনুসরণ, অনুকরণ এবং অনুধাবন করতে চেষ্টা করতাম। আমার কাছে তিনি ছিলেন দ্রোণাচার্যের মতো পরম গুরু।
সেই শব্দাচার্যের কাছে যেতে কখনো সাহস করিনি। একলব্যের মতো দূর থেকেই তাকে অনুসরণ করেছি মাত্র।
বিশেষভাবে শ্রেণীকক্ষে স্যারের প্রবেশ এবং প্রস্থানের নাটকীয় ভঙ্গিটি আমাকে ভীষণভাবে টানতো।শিক্ষকতা পেশায় গিয়ে আমিও স্যারকে অনেক ক্ষেত্রেই অনুকরণ ও অনুসরণ করেছি। শিক্ষার্থীদের ভালোবাসাও পেয়েছি তৃষ্ণার অধিক।
সম্ভবত শ্রেণীকক্ষ ২০১৭ কিংবা ২০২২ নম্বরে ক্লাস হতো স্যারের সঙ্গে।স্যার ক্লাসে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে সিলিঙের ফ্যান এবং দরজা বন্ধ হয়ে যেতো অদ্ভুত জাদুবলে।
তখন আমার মনে হতো বলাকার প্রেক্ষাগৃহে বসে আমি আনন্দ
মনে সৃজনশীল শিক্ষণীয় কোনো মুভি দেখছি,যার একমাত্র অভিনয়শিল্পী স্যার নিজেই।
আমিও সাঁইত্রিশ বছর শিক্ষকতা জীবনের আলোকে মানি যে, একজন শিক্ষককে অভিনয় শিল্পী হতে হয়,শুদ্ধ আত্মার ভালো মানুষ হতে হয়—-একজন শিক্ষক প্রকারান্তে মিডিয়াশিল্পীও বটে—তার শিক্ষার্থীর জন্যে।
শিক্ষকের ক্লাসরুমটাও এক ধরনের প্রেক্ষাগৃহ তো বটেই।বাহুল্য বলা যে,স্যারের আগে এমন সর্বহৃদয় হরণ করা,ব্রতচারী শিক্ষক জীবনে আমি পাইনি নিজে।
শিক্ষা যদি জাতির মেরুদণ্ড,শিক্ষক হলেন তার কারিগর বা শিল্পী। তিনি কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়,একজন নিবেদিত শিল্পী শিক্ষক হিসেবে জাতীয় জীবনের মহানায়কও বটে।
এজন্যেই বোধ করি, জ্ঞানের রাজ্যে একজন প্রকৃত শিক্ষকের শূন্যতা কখনো পূরণ হয় না।
তবে একজন শিক্ষকও যে শিক্ষার্থীদের কাছে চলচ্চিত্রের মোহনীয় জগতের অপরাজেয় একজন মহানায়ক হিসেবে পূজিত হতে পারেন—তা কেবল আকরম হোসেন স্যারকে দেখেই জেনেছি।
সম্ভবত তাকে দেখে, জেনে—আমার অবচেতন মনে একজন আদর্শ শিক্ষক হবার বাসনা জন্ম নিয়েছিলো অজান্তে।নইলে সোনালি ব্যাঙ্কের চাকুরি ছেড়ে, কাস্টমস্ এর প্রলোভন মাড়িয়ে কেন,শেষ পর্যন্ত শিক্ষকতাকেই ব্রত মেনেছি জীবনে?
স্যার আমাদের পড়াতেনও রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথের সংবেদনশীল চেতনালোক বোঝাতে গিয়ে তিনি আমার মতো নির্বোধ ও হাবেগোবা গোছের শিক্ষার্থীদের বোধ-বোধি এবং উপলব্ধি জগতের বন্ধ কপাট খুলে দিয়েছিলেন ২/১টি উদাহরণেই।হৃদয়বৃত্তির সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বোধগুলো তিনি তুলে ধরেছেন পরম মমতা ও সহিষ্ণুতায়।
এমএ শেষবর্ষের ক্লাসে পড়িয়েছেন রবীন্দ্রনাথের যোগাযোগ উপন্যাস।
স্যারের পাঠের গুণে কুমু যেমন আজো আমাদের হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা ও সহানুভূতি আকর্ষণ করে উজ্জ্বল হয়ে আছে। তেমনি তার অত্যাচারী স্বামী মধুসূদন ঘোষাল ততোধিক ঘৃণার পাত্র হিসেবে পাঠকের মনে রয়ে গেছে।
‘যে মার দেয়, সে ভোলে, কিন্তু যে মার খায়, সে কখনো ভোলে না’।
এই রূঢ় বাস্তবতা মেশা সংলাপটি মনে হলে, আজো স্যারের কণ্ঠস্বরটি যেন শুনতে পাই মহাকালের ওপার থেকে।
স্যার যত কঠিন কিছুই পড়াতেন না কেন, তার মধ্যেও এক ধরনের আনন্দ-বিনোদন যেন আমি খুঁজে পেতাম। হোক তা জ্ঞানের আনন্দ, কিংবা জানার আনন্দ। স্যারের পড়ানোতে সেই পরমানন্দ লুকিয়ে ছিলো, যা একজন শিক্ষকের জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য বা অর্জন।
স্যারকে পেয়েছিলাম বলেই হয়তো নিজেও একজন ভালো শিক্ষক হতে চেষ্টা করেছি শেষদিন পর্যন্ত। শিক্ষার্থীদের অতুলনীয় ভালোবাসা কম কিছু পাইনি। তাই তো আজো মনের মধ্যে সেই একই গান বাজে—-
আমি অকৃতি অধম ব’লেও তো কিছু
কম করে মোরে দাওনি;
যা দিয়েছ, তারি অযোগ্য ভাবিয়া
কেড়েও তা কিছু নাওনি।।
কবি রফিক আজাদের সঙ্গে জীবন জড়িয়ে জানতে পেরেছিলাম আহমদ কবির স্যার, আবু জাফর স্যারের মতো সৈয়দ আকরম হোসেন স্যারও কবির সহপাঠী এবং পরম বন্ধু।
কিন্তু কোনোদিনও আমি আমার শিক্ষকদেরকে স্বামীর বন্ধু ভাবনায় রেখে স্বাভাবিক আচরণ করতে পারিনি।সারা জীবন আমি তাদের কাছে শিক্ষার্থী থেকে গেছি। ভয় হয়তো একটু কমেছে কিন্তু স্যারদের সমুখে কথা বলায় এখনো এক ধরনের জড়তা এসে আমাকে আবিষ্ট করে ফেলে। মা-বাবার কাছে সন্তান যেমন কখনো বড় হতে পারে না, তেমনি শিক্ষকের কাছে চিরকাল শিক্ষার্থী থেকে যাই কেন যেন।
আমাদের এক সহপাঠী বন্ধু জিনাত ইমতিয়াজ, মাতৃভাষা ইনস্টিটিউশনে মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছে বেশ কিছুকাল। স্যারের স্নেহধন্য ছিলো যেমন, তেমনি স্যারের বাসায় তার অবাধ যাতায়াত ছিলো সেই সময়ে।ওকে খুব ভাগ্যবান বলে ঈর্ষা করতাম আমরা ক’জনা।
ওর মুখ থেকে স্যারের পারিবারিক কিছু গল্প শুনে যেন ধন্য হয়ে যেতাম সেই সময় পরিবেশ বলয়ে।
তবে স্যারের ছাত্রী এবং কবি বন্ধুর স্ত্রী পরিচয়ে একবারই শুধু স্যারের ক্যাম্পাসের বাসায় গিয়েছিলাম, সেদিনও সঙ্গে ছিলো বন্ধু
জিনাত ইমতিয়াজ।স্যারের সঙ্গে অনেক গল্প হয়েছিলো সেদিন।
তবে ফাস্টইয়ারের ভয়-ডর সঙ্গেই ছিলো।
সৈয়দ আকরম হোসেন স্যার ছিলেন আমার আদর্শ স্থানীয় ব্যক্তিত্ব,মহত শিক্ষক হিসেবে অসামান্য, অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব বটে।দেবতাজ্ঞানে অতুলনীয় মনীষী তিনি।
সৈয়দ আকরম হোসেন কেবল আমারই প্রাণপ্রিয় স্যার নন।
হাজার হাজার শিক্ষার্থীর প্রাণে তার মাঙ্গলিক মূর্তির অধিষ্ঠান।
বিস্ময় ভারাতুর এই ব্যক্তিত্বের সংক্ষিপ্ত পরিচয়ে বলা যাবে যে, তিনি বাংলাদেশের একজন অধ্যাপক ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, যিনি রবীন্দ্র-গবেষণার জন্যে অসামান্য প্রসিদ্ধি পেয়েছেন। গবেষণার জন্য ১৯৮৯ সালে “বাংলা একাডেমি” পুরস্কার লাভ করেন। রবীন্দ্র সাহিত্যের-চর্চা ও গবেষণার জন্য পেয়েছেন ” বাংলা একাডেমি রবীন্দ্র-পুরস্কার ২০১৬”।
গবেষণা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০১৭ সালে “একুশে পদক” লাভ করেন।
কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট ২০১৮ সালে অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেনকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধিতে ভূষিত করেছে। এছাড়া বিভিন্ন সংগঠন থেকে রবীন্দ্র-গবেষণা ও সাহিত্য-গবেষণার জন্য নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
পরিশেষে বলি যে,এই মনীষীর জ্ঞানের আলো থেকে সামান্য ধার নিয়ে যাপন করেছি আমি, এক অসামান্য জীবন। জীবন উৎযাপনের এই ঋণ কখনো শোধ হবার নয়।
স্যারকে যখন প্রথম দেখি,তিনি তরুণ অধ্যাপক।বাংলা বিভাগের উচ্ছ্বল, সমুজ্জ্বল করিডোরে ফেননিভ তরঙ্গ তুলে তিনি যখন যাতায়াত করেন। তার পদভারে করিডোরের সকল দৃষ্টি তারই পথকে অনুসরণ করে সুদূরে মিলিয়ে যেতো। অদ্ভুত এক নাটকীয় ভঙ্গিতে ক্লাসে পড়াতে শুরু করতেন,পাঠ শেষ করে প্রস্থানের ভঙ্গিটিও ছিলো ততোধিক আকর্ষণীয়।
তখন তিনি প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদায়ন পেয়েছেন সবে।
তাকে ঘিরে থাকে ততোধিক তরুণ ছাত্র-ছাত্রীর মধুর গুঞ্জন।মহুয়ার বনে যেন মৌমাছির গান।বাংলা বিভাগের প্রাণ তিনি।
১৯৭৯ সালে যখন আমি এম এ ফাইনাল দিয়ে বেরিয়ে আসি আর আগের বছর স্যার সহযোগী অধ্যাপক হয়েছেন।
১৯৮৪ সালে তিনি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।
১৯৯১-১৯৯৩ সাল পর্যন্ত স্যার বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এই সময়ে একবার দেখা হয়েছিলো স্যারের সঙ্গে, উষ্ণ অভ্যর্থনায় কেটেছিলো অসামান্য কিছু সময়। এখন প্রযুক্তিই শেষ সম্বল। ফেসবুকে দেখা হয় ছবির সঙ্গে ছবির।এই তো আমাদের বর্তমান জীবনের একমাত্র উৎযাপন।
তবু যে তা দেখতে পাই—বেঁচে থাকবার বিশেষ অনুপান হিসেবে—সেটাই অনেক বড় কিছু।ভাগ্যিস, স্যারকে পেয়েছি ফেসবুকে।তার আগে অবশ্য কবি সরকার আমিনের ফেসবুক থেকে স্যারের সব খবরাখবর পেতাম।এখনো পাই।
অতিমারির দু’বছরে অনেক হারিয়েছি আমরা। শস্যরিক্ত এই সময়ে স্যার আপনি একমাত্র বটবৃক্ষের ছায়া আমাদের মাথার পরে।
আপনার শুভ জন্মদিনে বিনীত শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা পাঠালাম আমার এই ক্ষুদ্র রচনার মাধ্যমে।
শুভ জন্মদিন স্যার।
সকর্মক শতেক বছর আয়ু চাই আপনার জন্যে।
আবারো জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা অপার।
৮/১২/২১
আইসবোট টেরেস, টরন্টো