মাসুদ রানা ও কুয়াশা সিরিজের ৩১০ বইয়ের স্বত্ব শেখ আবদুল হাকিমের


মাসুদ রানা সিরিজের কয়েকটি বই। ছবি: সেবা প্রকাশনী

মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি ও কুয়াশা সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে শেখ আবদুল হাকিমের পক্ষে কপিরাইট অফিসের দেওয়া সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের করা রিট খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ (সোমবার) এ রায় দেন। একই সঙ্গে কপিরাইট অফিসের সিদ্ধান্তে এর আগে হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশও প্রত্যাহার করা হয়েছে।

রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটসের আইনজীবী মো. ইফতাবুল কামাল বলেন, ‘এই রায়ের ফলে মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি ও কুয়াশা সিরিজের ৫০টি বইয়ের স্বত্ব শেখ আবদুল হাকিমের বলে কপিরাইট অফিসে সিদ্ধান্ত বহাল থাকছে।

গত বছরের ১৪ জুন কপিরাইট অফিসের দেওয়া আদেশে মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি ও কুয়াশা সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে শেখ আবদুল হাকিমের পক্ষে সিদ্ধান্ত আসে। ফলে লেখক হিসেবে তার স্বত্ব পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।

এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত বছরের আগস্টে হাইকোর্টে রিট করেন কাজী আনোয়ার হোসেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল দিয়ে মাসুদ রানা ও কুয়াশা সিরিজের কিছু বইয়ের বিষয়ে কপিরাইট অফিসের দেওয়া আদেশ অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য স্থগিত করেন।

রুলে কপিরাইট অফিসের গত বছরের ১৪ জুন দেওয়া আদেশ কেন এখতিয়ারবহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। সংস্কৃতিসচিব, কপিরাইট অফিস, রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটস, কপিরাইট বোর্ডসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়। রুলের ওপর শুনানি শেষে রায় দেওয়া হলো।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মুরাদ রেজা ও হামিদুল মিসবাহ। অন্যদিকে, সংস্কৃতিসচিব ও রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটসের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও মো. ইফতাবুল কামাল। পরে হামিদুল মিসবাহ বলেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।

২০১৮ সালের ২৯ জুলাই আবদুল হাকিম মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি ও কুয়াশা সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে স্বত্ব বা মালিকানা দাবি করে সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেন।বিষয়টি আমলে নিয়ে শুনানি শেষে চলতি বছরের ১৪ জুন আদেশ দেয় কপিরাইট অফিস।

কপিরাইট অফিসের আদেশে বলা হয়, সুষ্ঠু সমাধান ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে কপিরাইট বোর্ড বা বিজ্ঞ আদালত থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগ পর্যন্ত আবেদনকারীর দাবি করা ও তালিকাভুক্ত বইগুলোর প্রকাশ বা বাণিজ্যিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য প্রতিপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হলো।এছাড়া প্রতিপক্ষকে আবেদনকারীর কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন করা প্রকাশিত বইগুলোর সংস্করণ, বিক্রীত কপির সংখ্যা ও বিক্রয়মূল্যের হিসাব বিবরণী এই আদেশ জারির পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হলো। এই আদেশের বৈধতা নিয়েই কাজী আনোয়ার হোসেন রিট করেন।

গত ২৮ আগস্ট শেখ আবদুল হাকিম মারা যান।

সূত্র: প্রথম আলো, ডয়চে ভেলে