ধানবিদ্যার চাঁদ ॥ আব্দুল আজিজ


অলঙ্করণ: কাজী জহিরুল ইসলাম

আমার বিষয় তাই, যা গরীব চাষির বিষয়
চাষির বিষয় বৃষ্টি ফলবান মাটি আর
কালচে সবুজে ভরা খানা খন্দহীন
সীমাহীন মাঠ।
চাষির বিষয় নারী।
উঠোনে ধানের কাছে নুয়ে থাকা।
পুর্নস্তনী ঘর্মাক্ত যুবতী।
-আল মাহমুদ

ধানবিদ্যার চাঁদ ওঠার আগে কাটা ধানগাছের মতো বিছিয়ে আছে অন্ধকার।বিদ্যাধরের নামটা শোনাতে অদ্ভুত লাগলেও কোনো কিছুই করার নাই।গোপনে হাল ধরেছিল প্রেমের কিন্তু একটা সময় সে প্রেমিক হিসেবে ব্যর্থ হয়।এসব খবর কে বা কার রাখে।লম্বা মুখ, থুত্নি নেমে এসেছে অনেকটা গলার কাছে আর বড়পাপড়ি ওলা চোখের ছেলেটা শেষমেশ দুখে দুঃখী হয়ে শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার চিন্তা করে।দামাটে শরীরের ছোড়া পাহাড় পিঠে করে চলাফেরা করার ক্ষমতা রাখে।কিন্তু ওসব আলাপ মেরে তো কোন লাভ হবে না।সে হঠাৎ রাতে গাছের গোঁড়া থেকে পিঁপড়ের বহরের কাছে বসে ছিল অনেকক্ষণ।

সে এই গ্রামে ধান কাটার জন্য এসে বলছে এই গ্রাম নাকি তার।এই গ্রামেই তার জন্ম হয়েছিল।আর এই আবাদি সকল জমি তার সাত পুরুষের।
তা কতদিন আগের কথা? তার দাবির মুখে পড়ে লোকজন জড়ো হয়ে জিজ্ঞাসা করে।

সে বলতে পারে না।উপস্থিত লোকজনের মুখের ভঙ্গিমা দেখে বলে আমি আসলে ভুলে গেছি।মনে পড়লেই বলে দিব৷

সবাই তার মনে পড়ার জন্য দোয়া করতে থাকে।সবার মাথায় বাড়তি টেনশন দিয়ে দিব্যি ছোড়া মাঠে ধান কেটে যাচ্ছে।
চিকন ধারালো বুদ্ধির একজন চাষি ধান কাটতে কাটতে বলে তা মনে পড়ল বললে একটু আগে যখন লাহারি (সকালের নাস্তা) খাচ্চিলে।
কই কখন?
তুমি কি গো ছেলে একটু আগেনা বললে যে তোমার মনে পড়েছে।আর এখন বলছ কিছুই তুমি বলোনি।
আমি তো মুখ বন্ধ করেই ধান কেটে যাচ্ছি।স্মৃতি কেটে ওঠার চেষ্টা করছি কিন্তু পারছি না।
আপনারা হয়তো ভুল শুনেছেন।বাতাসের তোড়ে কত কিছুরির ডাক ভেসে আসে।
তাহলে তুমি বলবে না, ভান ধরে আছ? শুন ছেলে তোমার মোটা এড়ে শরীর দেখে কিন্তু আমরা ভয় পাই না।ওটার ভয় দেখাতে আসিও না যেন।
আপনারা কথাটা অনেক দূর নিয়ে যাচ্ছেন তাই।আমি মনে পড়লেই বলব। এই গ্রামেই আমার জন্ম।জন্মের ইতিহাস জানার সাধ কার না আছে বলুন৷

কাস্তের মতো ধারালো রোদের দিনে তার জন্ম হয়েছিল।একজন পির এইগ্রামে আসে যাকে পরে হত্যা করা হয়।কিন্তু কিভাবে! গ্রামের মানুষের তো কোন দোষ ছিল না।এমন ধারালো রোদের দিনে পিরের জীবনাবসান নিয়ে প্রচুর গাল গপ্প চাউর হয়েছিল।এই গল্প যেদিন থেকে গ্রামের মানুষেরা বলা শুরু করল।তখন সেই চলতি প্রজন্মের শেষের দিকে এসে অবনতি শুরু হয়।তারা কাজকর্ম ছেড়ে পিরের গল্প মেরে বেড়ায়।

তবে গ্রাম নষ্ট তো একেবারে হয়ে যায়নি।যারা ভোক অনুভব করত তারা মাঠে নেমে পড়ত।সেই দিন তো অনেক আগের, মরা বিলটা বিলুপ্ত হওয়ার আগে।টেন্ডারি যন্ত্রপাতি ভিড়ার আগেই।

তো সে গল্প এখন কেউ আর করে না।অপয়া অশুভ সেই গল্প।
মানুষ নষ্ট আর বখে যাওয়াকে তুমুল ভয় পায়।কি সেই অপয়া অশুভ গল্প? যার মধ্যে শুভর বিন্দু মাত্র চিহ্ন নাই।শোনা যায় প্রচণ্ড গরমের দিনে এক পির বাবা গ্রাম পরিবর্তন করে ভক্তের উদ্দেশ্যে তার বাড়ি যাচ্ছিল।তেষ্টায় বুক ফেটে বরিন্দের মাঠ , এতো গরম পড়েছে যে তিনি ক্লান্ত হয়ে যান।আশেপাশে কোন গ্রাম ছিল না।এমনকি কোন ফলদ বৃক্ষ।
গ্রামটা সম্পর্কে পিরের ধারণা হল যে এখানকার মানুষ বৃক্ষপ্রেমী নয় এবং আবাদে অলস।

ক্লান্ত মস্তিষ্কে আরও অনেক কথা খেলতে থাকল৷অবশেষ সে তার কেরামতির জোরে এক ঘাসের জঙ্গলে সাপে পরিণত হয়ে শুয়ে পড়ল।
সাপ হওয়ার পর পিরের গতর ঠান্ডা হয়ে এলে তার চোখ চেপে আসে ঘুম।
তারপর সন্ধ্যার আগ দিয়ে তার ঘুম ভাঙে মানুষের চলাচল আর কথাবার্তার শব্দে।

তাকে পেরিয়ে মানুষের দলটা কিছুদূর চলে যাওয়ার পর সে সাপ থেকে আবার মানুষে রুপান্তর হয়। এবং সে তাদের কাছে রাত্রিযাপনের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করে।

তার আলখাল্লা আর সাদা বটের ঝুরির মতো প্রাচীন দাড়ি, টুপি আর ঝোলা দেখে তারা বুঝতে পারে ইনি অনেক বড় একজন কামেল বুজুর্গ মানুষ।তাদের মধ্যে কয়েকজন কাজ কামের ওসিলা দিয়ে কেটে পড়ল। কিন্তু যে রয়ে গেল সে তাকে নিয়ে গেল নিজের বাড়িতে।
রাতের আয়োজন শেষে।পিরের জন্য বিছানার ব্যবস্থা করল সেই ব্যক্তি।
বয়ানের আয়োজন করার ইচ্ছা থাকলেও তা তিনি পিরের ক্লান্ত দেহ দেখে বলার সাহস পেলো না।কিন্তু পির তার মনের কথা বুঝতে পেরে বলল। হবে, হবে। তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাবি, ইবাদত করা ব্যতীত রাত জেগে থাকা ভালো নয়।

সে ব্যক্তি পিরের কথা শুনে ঘুমিয়ে পড়ে।কিন্তু অনেক রাতে হাগা চাপালে জেগে ওঠে, কাঁসার বদনাটা নিয়ে বারান্দায় নেমে আসলে সে দ্যাখে, যে ঘরে কুটুম আছে সে ঘর আলোয় আলোকিত।
সে কোতূহলী হয়ে ঘরের জানালা দিয়ে দ্যাখে পির নাই তার জাগায় একটা চকচকে উজ্জ্বল সাপ।তারপর হত্যার ইতিহাস।

এই গল্পের বাকিটা যন্ত্রণা দেয়৷ সমাপ্তিটা কেউ সঠিকভাবে টেনে বলে না।মহিষের মতো গো ধরে বসে থাকে।
আবার চাষিরা ছেলেটাকে ধরে প্রশ্ন করে।তুমি শিক্ষিত, ভালো পরিবারের ছেলে তা এমন ভবঘুরে হয়ে বেড়াচ্ছ কেন?
অচেনা আগন্তুক ছেলেটি চুপ করে থাকে। আমি আমার জিজ্ঞাসাটা পূরণ করতে এসেছি।

তুমি বললে তো আর এই গ্রামের আবাদি জমি তোমার হয়ে যাবে না।
কেন হবেনা? তোমাদের গ্রামের পড়াশোনা জানা কাউকে ডাকো। যে দলিল পত্র বুঝে, তাকে ব্যাপারটা বুঝিয়ে বললে সে বুঝবে।
বিরক্তি এনে তারা চুপ মেরে যায়।কাউকে ডাকার জন্য তাদের ঠোঁট নড়ে ওঠে না।
কি হলো?
কিছু না।আমাদের গ্রামে কোনও শিক্ষিত ছেলে অবশিষ্ট নাই।
কেন?
তারা শহরে গিয়ে, গ্রামে ফিরে আসে না।যেই গেছে সেই থেকে গেছে। তাই আমরা আমাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাই না।যারা পাঠায় তারা ভবিষ্যতে যেটা ঘটবে তা জেনেও পাঠায়।নিয়তিকে তারা মেনে নিয়েছে৷

আমি কিন্তু শহর থেকে এসেছি।
তোমার মতো পাগলাটে তারা নয়।আর তোমার ধান কাটার হাত দেখে মনে হচ্ছে না যে তুমি শহুরে।

মৃত শরীরে আছড়ে ভরা ঘুমের মতো, ঘুমিয়ে আছে এই গ্রাম। কিন্তু ফসল গুলো এত সতেজ আর প্রাণবন্ত যে বলার কথা না। যদি পরিশ্রম করে আরও আবাদ হবে।কিন্তু তারা ওসব না করে ঠুক কথাতে প্রাচীন গল্প শুনিয়ে দেয়।সেই কাজে তারা ওস্তাদ। সচারাচর যে গল্প মেয়েরা তাদের বগলের পশম কামাতে কামাতে করে থাকে।আটা কুটতে করে থাকে।মুরগির ডিমের তা দেওয়ার তারিখ মনে করে বাচ্চা ফুটার দিন ইয়াদ করে থাকে।
কিংবা গল্পে চমৎকার এঁঠেল মাটি তাতে মহিষের ক্ষুরের ব্যথাহীন টোকা আছে।
সেই থেকে চাষীদের আধুলি দল ভান ধরে বসে আছে,ঝিম ধরা কুঁচে মুরগির মতো।
কিছু খাবে? ভাত থালিতে দেব? কাঁসার থালি গো ছ্যাল্যা।আঁশটে হাতে চাষীর বউ মাথায় কাপড় টানে।কিন্তু ব্লাউজের বগল নিয়ে বগলের তলা অবধি ছেড়া অংশ ঢাকা পড়ে না।সেটা দেখা যায় গ্রামের কম বেশি সব মহিলার মতো তারও।

পোষা হাঁসগুলো ডিম পেড়ে পেড়ে তাদের ভেতর খোসসা হয়ে গেছে। একসময় তারা পেঁয়াজের খোসার মতো পাতলা খোসার ডিম পাড়ে। সে ডিমে বাচ্চা ফুটেনা, বাজারে বেচা যায়না।

এসব বর্ণনা নিজ চোখে মনে করে ভবঘুরে আগুন্তক।
বলে-
না।আমি নিজেই রান্না করে খাব।
তুমি বুঝি আমাদের বিশ্বাস করছ না।তোমার দাবি মুছতে ভাতে বুঝি বিষ দিব৷সাদা ধুতুরায় বিষ কম।যদিও কালো ধুতুরা অহরহ না পাওয়া গেলে সন্ধান করলে পাওয়া যেতে পারে।
তা নয়।আমার যদি খোদা এখানে মরন রাখে তো তোমাদের বিষমাখা ভাত আমার রুজির অংশ৷কিন্তু আমি তো যত জায়গায় যায় নিজেই রান্না করি।দুদিনের ধানকাটার যা জিন বা টাকা পেয়েছি তাতে দিব্যি চলবে৷

কিছুদিন পর সেই আগন্তুক ছেলেকে নিয়ে আবার জটলা। এবার কোথায়?
ধানক্ষেত?
বুঢ়া বটগাছ?
না কোথাও না। সোজা কবিরাজের বাড়ি, যে কিনা ধানের বীজ সংরক্ষণ করে।সে নিরক্ষর কিন্তু কৃষিজ্ঞান প্রখর কবিরাজ গবেষণা করে যাচ্ছে আসলে কোন ধানে ফলন বেশি হবে।মাটির উর্বরতা পরীক্ষা করে। মাসের মাস, বছরের বছর, কালের কাল। খরায়, মঙ্গায় মানুষের ঘরে চাল থাকবে অনাহারে মরবে না।
এসব জ্ঞান এই কবিরাজ কোথায় পেলো?
সে শিখতে এসেছে সেই বিদ্যা।ধানবিদ্যা।
কবিরাজের বয়স হয়েছে।বাঁঝা, বাচ্চাকাচ্চা হয়নি। তার কোন উত্তরাধিকার নাই৷বউটি মৃগী রোগী ছিল, পোখরে ডুবে মরেছে।কেউ কেউ বলে চুলহিতে টেনে পানিতে বসিয়ে রক্ত চুষে ছেড়ে দিয়েছে।চুলহির বিশাল মাথার চুল জোঁকের মতো তেলঠ্যা।পায়ে বেড়ি দিয়ে টেনে বসিয়ে দেয়।তারপর সে তার কাজ সিদ্ধি করে।কবিরাজ সবার মুখ বন্ধ করতে পারে না৷
এভাবেই মৃগী ব্যাধি নাকি চুলহি কাণ্ডএই নিয়ে দ্বন্দ্ব চলতে থাকে।

কবিরাজ তুমি কি শুনেছ এই ছেলে দাবি করছে গোটা গ্রামের জমি নাকি তাদের?
কবিরাজ হাসে।তাতে কি এসে গেলো বলো তোমরা?
তার জামার পকেটে কি তোমার গ্রাম আটবে?
কিংবা মাথায় সবটা।
হে হে এই ছোকরা যাক না নিয়ে পুরো গ্রাম।এই আবাদি জমি, পিরের অভিশাপে অভিশপ্ত এই গ্রাম৷
কয় আকাল দেখলে? শেষ সংকটে কেউ তো এলো না।
জ্ঞান খানি না থাকলে কবরে হাড়ের খোয়াড় হয়ে বসে থাকত।
আল্লাহ বাচিঁয়ে রেখেছিল বলে বেঁচে আছি।এই ছোকরা কে কি পিরের মতো পাকড়াও করতে চাও?
না।গ্রামবাসী বলে ওঠে।
তোমাদের সন্তান কিংবা ঘরের আত্মীয়রা কি যোগাযোগ করছে কারো সাথে?
না।
তারা এই পিরের অভিশপ্ত গ্রামে আসতে চায় না।

সকাল সকাল সবাই মাঠে নেমে আসে তার আগে কালাইয়ের রুটি মরিচ নুন ডলে হাতে হাতে তুলে নেয়।
খায় উদর ভরে, ক্ষুধা বাড়িতে রেখে গেলে কাম হয় না।থরথর করে কাপতে থাকে শরীর।
ঠান্ডা পানির জন্য সামান্য দূরে চখরাবখরা রঙের পিলারের পাশে ডিপের পানি খেতে যেতে হয়।
মোরগ বাঁক দেয় অদূরের গ্রামে সেটা বেজিদের জন্য সুসংবাদ, তাদের শিকার আসেপাশে আছে।
তবে মা মুরগির বাচ্চাগুলো বেশি সুস্বাদু।আর শিয়াল গুলো গোরস্থানে আখড়া করেছে।

ভবঘুরের কথাতে সবাই যে বিভ্রান্ত হয়েছে এটা কিন্তু সবাই বুঝতে পারেনি।
তারা নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে কিভাবে তাদের নিজেদের জমিজমা রক্ষা করা যায়।তারা ইচ্ছা করলেই গ্রামবাসী এক হয়ে শেয়ালের আখড়ার কোন এক স্থানে দাফন করে দিতে পারে কিন্তু তারা কিছুই করছে না।
তারা আগন্তুকের কথা শুনে আরও জমি মুখি হয়েছে।কৃষি জ্ঞানের উত্তরাধিকারী হওয়ার জন্য কবিরাজের বাড়িতে শিখতে যাচ্ছে ধান বিদ্যা।
তারা হৃদয় থেকে মুছে ফেলতে চায় যে তাদের গ্রাম অভিশপ্ত নয়।
পির তাদের কোন অভিশাপ দিয়ে যায়নি।
অভিযোগ নাই কোন।
তবুও তারা ভয়ে এতদিন আবাদবিমুখ হয়েছিল।
ছেলেদের পাঠিয়ে দিয়েছে শহরে।
এই গ্রামে কোন দরগা বা মাজার নাই।মন্দিরও নাই।মসজিদ আছে একটা।দুই গম্বুজ ওলা প্রাচীন মসজিদ।কিন্তু চকচকে টলটলে।পাথরের গতর ইটের গম্বুজ পাথরের মেঝে।
মসজিদের উসরা বা বারান্দা নাই।মেয়েরা নামাজ পড়তে পারে এক সাইডে।
সেটা লাল বিছানার চাদর দিয়ে আড়াল করা আছে।

গ্রামটি যে প্রাচীন এই মসজিদই তার সাক্ষী বা প্রমাণ কিন্তু এই মসজিদ কিভাবে তৈরি হয়েছে তার খবর পাওয়া যায় না।গ্রামের মানুষ নিজেদের নৃতাত্ত্বিক পরিচয় একটা প্রাচীন মসজিদের উপর দিয়েই চালিয়ে দেয়৷
তারা ভাবছে এখন এই ভবঘুরে এই প্রাচীন মসজিদ নিজেদের পূর্বপুরুষের তৈরি বলে দাবি না করলেই হয়।তারা চিন্তার কুয়ায় পড়ে যায়।
নবি ইউসুফ কুয়াতে পড়লে আল্লাহ তার মুশকিল আসান করেন, কারণ তিনি নবি ছিলেন।আল্লার নবি।আর আমরা পাপী বান্দা, আল্লা কি আমাদের ক্ষুদ্র মুশকিল আসানে কিছু করবেন!
হয়তো করবেন আমরা সেটা উপলব্ধি করতে পারছি না বা পারব না।
একটা পিরের দোহাই দিয়ে সবকিছু ভুলে যেতে বসেছিলাম।
এই ছেলে যদি না বলত এই সকল জমি তাদের তাহলে আমাদের উদাসীনতা কি কাটত? তারা নিজেদের মধ্যে এসব নিয়ে আলোচনা করে।

তারপর দিনকে দিন তারা কৃষিজ্ঞানের উপর ভরসা রেখে জেগে ওঠে। ব্যস্ত হওয়ার দরুন বুঢ়া বটগাছের নিচে তার পরিশ্রমের জমানো জিন নিয়ে ছেলেটার খোঁজ নিতে সবাই যায়।
কিন্তু তাকে সেখানে আর পাওয়া যায় না। সে উধাও। তবে ছখানা ইট দিয়ে তৈরি আখার ছাইয়ের পাশে, পড়ে থাকতে দেখল বিশালদেহী সাপের একটা খোলস।

ধানবিদ্যার বছর।