নাগরিক কোলাহলের মধ্যে থেকেও নিজেকে অনেকটাই আড়ালে রেখে চলতেন কবি মাহমুদুল হাসান মাছুম। গত মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে তিনি আকস্মিক হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন এবং রাজধানীর হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২) বিকেল ৫টায় রাজধানীর কাঁটাবন এম্পোরিয়ামের বই মার্কেটে জাগতিক প্রকাশনের উদ্যোগে কবি মাহমুদুল হাসান মাছুমকে স্মরণ করে একটি সভার আয়োজন করা হয়।এতে উপস্থিত ছিলেন কবির পরিবার, স্বজন, বন্ধু, ভক্ত ও অগণন গুণগ্রাহী পাঠক।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ছোটপর্দার অভিনেতা, নাট্যপরিচালক কচি খন্দকার, অনিন্দ্য পত্রিকার সম্পাদক হাবিব ওয়াহিদ শিবলী, কথাসাহিত্যিক সেলিম মোর্শেদ, কবি অসীম সাহা, কবি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা টোকন ঠাকুরসহ অনেকে।
অনুষ্ঠানে কচি খন্দকার বলেন, মাছুম ভাইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় ৩ মাসের মতো।আজিজ মার্কেটে যখন বসতাম, আড্ডা দিতাম, তার সঙ্গে কথা হতো।তিনি ছিলেন একজন সৃষ্টিশীল মানুষ।তিনি সবসময় বলতেন, সৃষ্টিশীল বিষয়বস্তুকে আঁকড়ে ধরতে হয়।তিনি ছিলেন প্রকৃতপক্ষে একজন কবি, একজন দেশপ্রেমিক।এ সময় কচি খন্দকার কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
কবির আত্মার মাগফিরাত কামনা করে হাবিব ওয়াহিদ শিবলী বলেন, আমাদের মধ্য থেকে ভালো মানুষ কমে যাচ্ছে।মাহমুদুল হাসান মাছুম নিঃসন্দেহে ভালো মানুষ ছিলেন।আমাদের কথা বলার মানুষ কমে গেছে।তার সঙ্গে আমাদের গভীর রাতেও কথা হতো।তিনি মানুষকে সহজে আপন করে নিতেন।
সেলিম মোর্শেদ বলেন, মাছুম ভাই ছিলেন অত্যন্ত বন্ধুসুলভ একজন মানুষ।তিনি প্রায়ই আমাদের বাসায় ডাকতেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতেন।তিনি ছিলেন মাটির মানুষ।তিনি আমাদের আপন করে কাছে টেনে নিয়েছেন।মাছুম ভাই তার কবিতা দিয়ে আমাদের মাঝে আজীবন বেঁচে থাকবেন।
কবি মাহমুদুল হাসান মাছুমের স্ত্রী ও দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে।তিনি রেখে গেছেন অসংখ্য গুণগ্রাহী, ভক্ত, পাঠক ও বন্ধুস্বজন। তিনি দেশের পার্বত্য অঞ্চলের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি বিস্তারের কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।
১৯৬১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি নওগাঁয় কবি মাহমুদুল হাসান মাছুমের জন্ম।তার উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত কবিতার বই, ‘হিমঘরে পাখিসঙ্গ’, ‘বংশোদ্ভূত জোনাকিরা’ ও ‘সবুজ কবিতার ঋণ’।তার আরও দুটি নতুন কবিতার বই ‘ঔপনিবেশিক অন্ধকার’ ও ‘শ্মশানগামী জোছনা’ ইতোমধ্যে ছাপাখানায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে।