দেশের সর্বোচ্চ পুরস্কারের মধ্যে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার অন্যতম।কবি-সাহিত্যিকদের মধ্যে এ পুরস্কার নিয়ে আগ্রহ অনেক। প্রতি বছর বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার কারা পাচ্ছেন-এ নিয়ে জল্পনা–কল্পনা শুরু হয়।এমনকি পুরস্কার ঘোষণার পরও আলোচনা-সমালোচনা চলতে থাকে।
অমর একুশে বইমেলার প্রস্তুতির সঙ্গে সঙ্গে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা এখন অনেকটা নিয়মে পরিণত হয়েছে।সাহিত্যের সঙ্গে যারা জড়িত কিংবা খোঁজ-খবর রাখেন, তারা অপেক্ষায় থাকেন—কে বা কারা পাচ্ছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার।
২০২১ সালে পুরস্কার পেয়েছিলেন—কবিতায় আসাদ মান্নান ও বিমল গুহ, কথাসাহিত্যে ঝর্না রহমান ও বিশ্বজিৎ চৌধুরী, প্রবন্ধে হোসেনউদ্দীন হোসেন, অনুবাদে আমিনুর রহমান ও রফিক-উম-মুনীর চৌধুরী, নাটকে সাধনা আহমেদ, শিশুসাহিত্যে রফিকুর রশীদ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় পান্না কায়সার, বঙ্গবন্ধুবিষয়ক গবেষণায় হারুন-অর-রশিদ, বিজ্ঞানে শুভাগত চৌধুরী, আত্মজীবনীতে সুফিয়া খাতুন ও হায়দার আকবর খান রনো এবং ফোকলোরে পুরস্কার পেয়েছেন আমিনুর রহমান সুলতান।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, মূলত পুরস্কারের প্রতি আগ্রহটা শুরু হয় নভেম্বর থেকেই। আলোচনায় সরব থাকেন কবি-লেখকরা।বিভিন্ন মাধ্যমে সে আলোচনা ছড়িয়ে পড়ে।এ পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে আলোচনায় থাকা কিছু নাম বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা পেয়েছি।
এ বছর কবিতায় আলোচনায় আছেন—ফারুক মাহমুদ, ময়ূখ চৌধুরী, মজিবুল হক কবির, দুখু বাঙাল, মাহমুদ কামাল, গোলাম কিবরিয়া পিনু, সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, ফরিদ কবির, মাহাবুব কবির, চঞ্চল আশরাফ, মিনার মনসুর, জাহিদ হায়দার, তারিক সুজাত, জুয়েল মাজহার, টোকন ঠাকুর ও মাসুদ পথিক।
কথাসাহিত্যে এবার আলমগীর রেজা চৌধুরী, নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর, মোজ্জামেল হক নিয়োগী, পারভেজ হোসেন, মশিউল আলম, মনিরা কায়েস, সেলিম মোরশেদ, প্রশান্ত মৃধা, আকিমুন রহমান ও আহমাদ মোস্তফা কামালকে নিয়ে আলোচনা চলছে।
প্রবন্ধে ভীষ্মদেব চৌধুরী, মাসুদুজ্জামান, সরকার আবদুল মান্নান, আহমেদ মাওলা, ইসরাইল খান, জুলফিকার মতিন, অনীক মাহমুদ।
শিশুসাহিত্যিক যারা আলোচনায় আছেন, তারা হলেন—ফারুক নওয়াজ, ফারুক হোসেন, রোমেন রায়হান, তপংকর চক্রবর্তী, ধ্রুব এষ, ইমরুল চৌধরী, স ম শামসুল আলম, সাইদুজ্জামান রওশন ও সারওয়ার-উল-ইসলাম।
মুক্তিযুদ্ধ গবেষণায় যাদের নাম আলোচনায় আছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন—গাজী আজিজুর রহমান, রঞ্জনা বিশ্বাস, মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, ইসহাক খান, রীতা ভৌমিক ও মজিদ মাহমুদ।
ফোকলোর বিভাগে তুলনামূলক কম সাহিত্যিক থাকলেও ড. তপন বাগচী, মোস্তফা সেলিম, সুমন কুমার দাসের নাম আলোচিত হচ্ছে।
অনুবাদে পেতে পারেন সফিকুন নবী সামাদী, আলম খোরশেদ ও মাসরুর আরেফিন।নাটকে ফরিদ আহমদ দুলাল পেতে পারেন।
ভ্রমণকাহিনি বা আত্মজীবনী বিভাগে ইকতিয়ার চৌধুরী, বিজ্ঞানে মোকারম হোসেন, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গবেষণায় ড. মিল্টন বিশ্বাস ও ড. মোহাম্মদ হাননানের নাম শোনা যাচ্ছে।
সবমিলিয়ে যাদের নাম আলোচনায় এসেছে; তারা প্রত্যেকেই যোগ্য। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি বিভাগে একজন বা দুজন করে পাবেন পুরস্কার। ফলে অন্যদের আশাহত হতে হবে। এটাই স্বাভাবিক। তবে পরে যে তারা পাবেন না, এমনটি নিশ্চিত করে বলা যায় না।
আবার এ আলোচনার বাইরেও অনেকে আছেন, যারা বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য। ফলে আলোচনার বাইরে থেকেও যে কেউ পুরস্কার পেয়ে যেতে পারেন। তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবুও আশা করবো, যোগ্য ব্যক্তির হাতেই উঠুক যোগ্যতম পুরস্কার।