অগ্রহায়ণ সন্ধ্যায় কালির ‘লালনের সাধনসংগীত’


ছবি: লংরিড

সাহিত্য ও সংস্কৃতির সংগঠন কালির আয়োজনে শনিবার (২৬ নভেম্বর ২০২২) ঢাকার ধানমন্ডিতে ভাবনগর সাধুসঙ্গের ভাবসাধকদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘লালনের সাধনসংগীত’।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কথাসাহিত্যিক ও কালির সভাপতি পাপড়ি রহমান।এরপর অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন কালির সদস্য লায়লা মুন্নী ও সালমা তালুকদার।

লালনের সাধনসংগীত বিষয়ে আলোচনা করেন ড. সাইমন জাকারিয়া ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অনাবিল ইহসান।

আলোচনার পর প্রথমেই ডুগি-একতারা বাজিয়ে চর্যাপদ ও লালনের সাধনসংগীত পরিবেশন করেন সাধিকা সৃজনী তানিয়া।তাঁর ধ্যানস্থ সাধনসংগীতের পরিবেশন মন্ত্রমুগ্ধ করে দর্শক-শ্রোতাদের।সাধিকা সৃজনী তানিয়ার গানের পাশাপাশি দোতারা বাজিয়ে লালনের সাধনসংগীত পরিবেশন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অনাবিল ইহসান এবং বাউল অন্তর সরকার।

অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে ড. সাইমন জাকারিয়া বলেন, লালনের সাঁইয়ের সাধনসংগীতের আসর আয়োজনের জন্য প্রণতি জানাই সাহিত্য-সংস্কৃতি সংগঠন কালি এবং সংগঠকদের।বাংলাদেশের কোনো প্রচারমাধ্যম, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কোথাও লালন সাঁইয়ের সাধনসংগীতের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।লালন সাঁইয়ের সংগীত এখন বাণিজ্যিক ও বিনোদনমূলক গানে রূপান্তরিত হয়েছে।এতে লালন সংগীতের চিরায়ত ভাবধারা, বাণী, সুর, বাদ্য, পরিবেশনরীতির মর্যাদা প্রায় কোথাও তেমনভাবে দেখা যায় না।এই পরিস্থিতির বিপরীতে দাঁড়িয়ে ভাবনগর ফাউন্ডেশন প্রথম থেকেই সচেতনভাবে খোলা গলার গান খোলা কানে শোনার ঐতিহ্যগত চর্চার কাজটি করে আসছে এবং লালন সাঁইয়ের সাধনসংগীতের পাশাপাশি ভাবসাধকদের অংশগ্রহণে প্রাচীন বাংলার চর্যাপদের গানের পুনর্জাগরণের নিবেদিত।প্রায় ১০ বছর ধরে ভাবনগর ফাউন্ডেশন নিয়মিতভাবে সাপ্তাহিক সাধুসঙ্গ আয়োজন করে আসছে।

সাইমন জাকারিয়া বলেন, ঢাকার বুকে এমন স্নিগ্ধ ও সুন্দর একটি আসর আয়োজন করার জন্য ভাবনগরের পক্ষ থেকে কালির সব সদস্যকে অভিনন্দন ও প্রণতি জানাই।একইসঙ্গে আলোচক ও শিল্পীদের পুষ্পমাল্যে ভূষিত করা এবং আসরের শুরুতেই শিল্পীদের সম্মানি প্রদানের মাধ্যমে কালির সংগঠকগণ বাংলাদেশের ঐতিহ্যগত সংস্কৃতির প্রতি গভীরতর শ্রদ্ধার প্রকাশ ঘটিয়েছেন।এ ধরনের একটি আয়োজন ঢাকার অন্য সংগঠক ও আয়োজকদের অনুসরণযোগ্য মনে করি।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন লেখক ও সাংবাদিক লাবণ্য লিপি।শিল্পীদের হাতে সম্মানি তুলে দেন কবি মালেকা ফেরদৌস। কালির পক্ষ থেকে লালন সংগীত পরিবেশন করেন শারমিন জাহান শাম্মী।সবশেষে কালির আগামী অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন লায়লা মুন্নী।