২০২৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার লেখক হান কাং। সাহিত্যে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাবান এ পুরস্কারের জন্য তাকে মনোনীত করার কারণ হিসেবে নোবেল কমিটি বলেছে, হান কাংয়ের গদ্য তীক্ষ্ণ ও কাব্যময়।তাতে ইতিহাসের যন্ত্রণাবিদ্ধ বিষয়ের সঙ্গে মুখোমুখি হয়ে বোঝাপড়ার প্রচেষ্টা আছে। তার গদ্যে আছে মানবজীবনের ভঙ্গুরতার কথাও।
৫৩ বছর বয়সী হান কাংয়ের লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সাময়িকীতে একগুচ্ছ কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে।১৯৯৫ সালে তার একটি ছোটগল্প সংকলন বের হয়। আর সেটির মধ্য দিয়েই তার গদ্য পাঠকের সামনে আসে।
পরে হান কাং দীর্ঘাকার গদ্য লিখতে শুরু করেন। ‘দ্য ভেজেটারিয়ান’ তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বইয়ের একটি।২০০৭ সালে প্রকাশিত এই উপন্যাসের জন্য ২০১৬ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। এ উপন্যাসে হান কাং মানুষের নিষ্ঠুরতায় আতঙ্কিত এক তরুণীর ‘বৃক্ষের মতো’ বেঁচে থাকার লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেন।
নোবেল পুরস্কার কমিটি ১৯০১ সাল থেকে সাহিত্যে পুরস্কার দিয়ে আসছে। হান কাংকে নিয়ে ১৮তম বারের মতো একজন নারী পুরস্কারটি পেলেন।
প্রথম দক্ষিণ কোরিয়ান হিসেবেও সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং। নোবেল পুরস্কার বোর্ড তার পরিচিতি দিতে গিয়ে বলেছে, তিনি এমন একজন যিনি সঙ্গীত ও শিল্পকলার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।
নোবেল কমিটি আরও বলেছে, মানুষের জীবনের নানা দিক নিয়ে এগিয়েছে হান কংয়ের অনুসন্ধিৎসু মন। তাই তার কাজকে কোনো সীমানায় আটকে ফেলা যায় না। সহিংসতা, দুঃখ-কষ্ট ও পিতৃতন্ত্রের মতো নানা বিষয় উঠে এসেছে তার লেখায়।
প্রায় এক দশক আগে প্রকাশিত হলেও হান কাংয়ের উপন্যাস ‘দ্য ভেজেটারিয়ান’ ২০১৫ সালে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন ডেবোরাহ স্মিথ। পরের বছরই উপন্যাসটি ম্যান বুকার পুরস্কার পেলে লেখক হিসেবে হান কাংয়ের জীবন পাল্টে যায়। তার অন্যান্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে ‘দ্য হোয়াইট বুক’, ‘হিউম্যান অ্যাক্টস’ ও ‘গ্রিক লেসনস’।
সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার অনুষ্ঠানে সুইডিশ অ্যাকাডেমির স্থায়ী সচিব ম্যাটস মাম বলেন, শরীরের সঙ্গে আত্মার, জীবিতের সঙ্গে মৃতের যোগাযোগ নিয়ে হান কাংয়ের সচেতনতা অসাধারণ। তার গদ্য কাব্যিক ও নিরীক্ষাময়।সমসাময়িক গদ্যসাহিত্যে তিনি একজন উদ্ভাবকের ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছেন।